রবিবার, এপ্রিল ৭, ২০২৪

ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ, পালালেন পল্লী চিকিৎসক

যা যা মিস করেছেন

কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন (স্টাফ রিপোর্টার) : ত্রকোনার খালিয়াজুরীতে ভুল চিকিৎসায় মো. মহসিন মিয়া (৪০) নামে এক দিনমজুরের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পরপরই ওই দিনমজুরকে চিকিৎসা দেয়া পল্লীচিকিৎসক গা ঢাকা দিয়েছেন।

রবিবার দিনগত রাত ১২টার দিকে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ওই দিনমজুরের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করছেন।

মহসিন উপজেলার পাঁচহাট গ্রামের মো. মোক্তার আলী ছেলে। আর ওই পল্লী চিকিৎসক একই গ্রামের মো. তোফাজ্জল হোসেন। তিনি গ্রামের বাজারে তারেক মেডিকেল হল নামে একটি ওষুধের দোকান চালান।

মহসিন মিয়ার স্ত্রী আমেনা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, মহসিন অন্যের জমিতে কাজ করে ৬ সন্তানসহ আটজনের সংসার চালাতেন। কিছুদিন ধরে তার শরীর দুর্বল লাগছিল। এ কারণে রবিবার সন্ধ্যায় চিকিৎসার জন্যে পল্লী চিকিৎসক তোফাজ্জল হোসেনের কাছে গেলে তিনি তাৎক্ষণিক কিছু ভিটামিন ঔষধ দেন। পরে রাত ৮ টার দিকে বাড়িতে গিয়ে একটি স্যালাইন ও দুটি ইনজেকশন দেন মহসিনকে। রাতে স্যালাইন শেষ হওয়ার পর মহসিনের শারিরীক অবস্থায় অবনতি হতে থাকে। ছটফট করতে থাকেন। এক পর্যায়ে যৌনাঙ্গ ও পায়ূপথ দিয়ে রক্ত বের হতে শুরু করে। রাত ১২টার দিকে তিনি মারা যান।

আমেনা আক্তার আরো বলেন, ওই ডাক্তার ভূল চিকিৎসা করেই আমার স্বামীকে মেরে ফেলেছে। আমি এই ডাক্তারের বিচার চাই।

গ্রামের মহসিন মিয়ার প্রতিবেশী মো. রাজন মিয়া বলেন, একেবারেই তরতাজা মানুষটা ছিল মহসিন। উল্টাপাল্টা ওষুধ দিয়া লোকটাকে মেরে ফেলেছে। ঘটনার পর থেকে পল্লী চিকিৎসকের দোকানটা বন্ধ আছে। সে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। এর বিচার হওয়া দরকার। যেন আর কেউ তার ভুল চিকিৎসায় না মরে।

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মিঞা হোসেন বলেন, কাল বিকালেও বাজারে মহসিনকে হাঁটতে দেখেছি। আজ শুনলাম সে মারা গেছে। তরতাজা মানুষটার এভাবে মৃত্যু মেনে য়ো যায় না। অবশ্যই ভুল চিকিৎসার ঘটনাটা ঘটছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকে মোবাইলফোন বন্ধ করে পালিয়ে যান পল্লী চিকিৎসক তোফাজ্জল ।

বক্তব্য জানতে তার পরিবারের একটি নাম্বারে ফোন দিয়ে চিকিৎসক তোফাজ্জলকে পাওয়া যায়। অজ্ঞাত স্থান থেকে তিনি বলেন, আমার চিকিৎসা ঠিকই আছে। কোন ভুল চিকিৎসা হয়নি। রাতে তাকে ডেক্সটোজ ১০০০ এমএল স্যালাইন দেই। মিনিটে ৬০ ফোটা করে। তাছাড়া বি-প্লেক্স-১০ এমএল ও ক্যালসিয়াম-৫ এমএল ইনজেকশন দেই।পরে কেন সে মারা গেছে তা আমি জানি না।

খালিয়াজুরীর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আতাউর গনি ওসমানী বলেন, মহসিনকে যে ইনজেকশন এবং স্যালাইন পুশ করার কথা বলা হচ্ছে তাতে তার মৃত্যু হওয়ার কথা নয়। তবে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বা দ্রুত স্যালাইন পুশ করার কারণে তার মৃত্যু হতে পারে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখলে সঠিক কি কারণে মারা গেছেন তা বলা যাবে।

খালিয়াজুরী থানার ওসি মো. মজিবুর রহমান বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মহসিন মিয়া মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর হয়েছে। তার পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দিলে মামলা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে আইনগত সব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে জানান ওসি।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security