...
বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৮, ২০২৪

সকলের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ

যা যা মিস করেছেন

কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি :

উপাচার্য হচ্ছেন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রধান এবং এই আলয়ের মূল পিলার স্বরূপ। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব সমাপ্তির পর একজন উপাচার্যের জীবন কথায় দুই ধরনের গল্প জমা হয়। সফলতা অথবা ব্যর্থতা। এই দুটো গল্পই তৈরি হয় তার কর্মকাণ্ডের উপর ভিত্তি করে।

অনেক উপাচার্যই দায়িত্ব শেষ করেন সফলতার বরমাল্য নিয়ে আর অনেকেই ব্যর্থতার গ্লানি কে কাঁধে নিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে কিংবা নিরবে হারিয়ে যান। তবে এই দুই গল্পের মাঝেও আরো একটি গল্পের তৈরি হয়।

কোন কোন উপাচার্য তার মেধা, দক্ষতা এবং উন্নত পরিকল্পনার মাধ্যমে ও ভিন্নধর্মী শিক্ষার্থী বান্ধব নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে হয়ে ওঠেন অনন্য। এই অনন্যতা তার সফলতার পাল্লাকে আরো ভারী করে তোলে।
তেমনি এক অনন্য উপাচার্য হিসেবে ইতিমধ্যেই সুনাম কুড়িয়েছেন এবং সকলের মন জয় করে জয়ধ্বনি অর্জন করে নিয়েছেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ এর মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ।

বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের এই বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে। ২০১৭ সালের ১১ই জুন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের এই অধ্যাপক।

এরপর এক মুহুর্ত থেমে থাকেননি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কে গড়ে তুলতে নিরন্তর ছুটে চলেন। শাহজাদপুর উপজেলা শহর থেকে সাত কিলোমিটার পশ্চিমে প্রস্তাবিত জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে গিয়ে দেখা দেয় অসংখ্য জটিলতা। জায়গা জরিপ ও নিষ্কণ্টক করণ, যাতায়াত ব্যবস্থা, ভূমি দখল উচ্ছেদ, নদী শাসন সহ আরো অনেক নানাবিধ সমস্যা। কিন্তু মাননীয় উপাচার্য প্রথম থেকেই শাহজাদপুর এবং সিরাজগঞ্জের জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ এবং প্রশাসন এর সাথে সুন্দর সমন্বয় করে এইসব জটিলতাকে ধীরে ধীরে সমাধান করে তোলেন। ইতিমধ্য শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেন তিনি।

স্থানীয় তিনটি কলেজে অস্থায়ীভাবে ভবন নিয়ে এবং একটি অস্থায়ী প্রশাসনিক ভবন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শিক্ষার পরিবেশকে গড়ে তুলতে এবং শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবান্ধব পরিবেশে শিক্ষাদানের উদ্দেশ্য অনেক দৈন্যতার মাঝেও এবং নানা জটিলতার মাঝেও নানা রকম সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা তিনি করেন।

শিক্ষক – শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা – কর্মচারীদের জন্য বাস সার্ভিস চালু করণ, ফলাফলের ভিত্তিতে শিক্ষাবৃত্তি, মেয়েদের জন্য অস্থায়ী আবাসিক হল, চিকিৎসা ব্যবস্থা, লাইব্রেরি, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নার এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম তান্ত্রিক শিক্ষা কার্যক্রম। একটি প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন যতটা কঠিন, একটি বিশ্ববিদ্যালয় কে গড়ে তোলার দায়িত্ব নিয়ে উপাচার্য হিসেবে পথচলা তারচেয়েও বেশি দুর্গম এবং কণ্টকাকীর্ণ।

কিন্তু প্রফেসর বিশ্বজিৎ ঘোষ কখনো মন্থর হননি। একের পর এক অগ্রগামী উদ্যোগ গ্রহণ করে অস্থায়ী ক্যাম্পাসেই সুন্দর শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকেন। আর অন্যদিকে স্থায়ী ক্যাম্পাস গড়ে তোলার লক্ষ্যে সবরকম প্রতিবন্ধকতাকে মোকাবেলা করে এবং সরকারের নীতিনির্ধারণী মহল এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে প্রতিনিয়ত আলোচনা করে এগিয়ে যেতে থাকেন।

এসব কিছুর বাইরেও তাকে অনন্য করে তুলেছে তার নানাবিধ মহৎ কার্যক্রম যা ব্যতিক্রমী।
উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পেলেও রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে থাকা শিক্ষকতার টানে তিনি নিজেই হয়েছেন কলা অনুষদের রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের কোর্স শিক্ষক। সপ্তাহে দুদিন বা তিনদিন নিজেই লেখার মার্কার আর ডাস্টার হাতে ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিয়েছেন। পরীক্ষার সময় প্রশ্নপত্র তৈরি করেছেন ।

এরই মাঝে উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন অবস্থাতেই গবেষণায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৯ সালে একুশে পদক লাভ করেন প্রাবন্ধিক এবং গবেষক এই অধ্যাপক।
ইতোপূর্বেও তিনি সাহিত্যে অবদানের জন্য অসংখ্য পুরস্কার এবং স্বীকৃতি লাভ করেছেন।

ব্যক্তি হিসেবে প্রফেসর বিশ্বজিৎ ঘোষ সততার পরিচয় দিয়েছেন সবসময়। দায়িত্ব কালীন অবস্থায় কোন অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ কখনো তার নামে পাওয়া যায়নি। কথিত আছে, একবার এক চাকরিপ্রার্থী মোটা অংকের ঘুষ তাকে দেবার জন্য নিয়ে আসলেও তিনি কঠিন ভাবে তা প্রত্যাখ্যান করেন এবং সেই ব্যক্তিকে পুলিশে সোপর্দ করেন।

উপাচার্যদের বিলাসিতা কিংবা আপ্যায়ন বিষয়ক নানা তিক্ত গল্প থাকলেও প্রফেসর বিশ্বজিৎ ঘোষ এসব কিছু থেকে নিজেকে বিরত রেখেছেন। প্রয়োজনের বাইরে ন্যূনতম কোনো সুযোগ-সুবিধা তিনি গ্রহণ করেননি।

কোন অনিয়ম, দুর্নীতি কিংবা অন্যায়ের সাথে কখনো আপস করেননি তিনি। স্বজনপ্রীতির অভিযোগ ওঠেনি কখনো তার বিরুদ্ধে। গতিশীল নদীর মতো তিনি রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিবিজড়িত জায়গায় প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়টিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন সবসময়।

প্রফেসর বিশ্বজিৎ ঘোষ একজন সুযোগ্য অভিভাবক হয়ে উঠেছেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী সকলের কাছে।

নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে অনেক অপ্রাপ্তির মাঝেও প্রতিনিয়ত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের তিনি অনুপ্রাণিত করেছেন এগিয়ে যাবার।শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি সর্বদা ভাবেন এবং সেইভাবে তাদেরকে গড়ে তোলার জন্য শিক্ষকদের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। সহযোগিতা করেছেন দায়িত্বের বাইরে ব্যক্তিগতভাবেও।

বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করলে এই চিত্র বিরল। প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ একজন জ্ঞানতাপস ব্যক্তি।

দেশবরেণ্য এই গবেষক হৃদয়ে ধারণ করেন এদেশের মাটি, মানুষ এবং বঙ্গবন্ধুকে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার অংশহিসেবে তার যে দায়িত্ব সেটিও সফলতার সাথেই পালন করেছেন। আর এই সব কিছু মিলিয়ে তিনি হয়ে উঠেছেন অনন্য। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে অমলিন থাকবেন তিনি চিরকাল।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security
Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.