রবিবার, এপ্রিল ৭, ২০২৪

মেডিকেল রিপোর্টে আটকে আছে তদন্ত

যা যা মিস করেছেন

রাজধানীর কলাবাগানে মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থী আনুশকা নূর আমিনকে ধর্ষণ শেষে হত্যা মামলা এখন পিবিআইতে। একমাত্র আসামি ইফতেখার ফারদিন দিহানের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পেছানোসহ নানা কারণে আনুশকার মায়ের লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলাটির তদন্তভার পেয়েছে পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন)। কিন্তু পিবিআইয়েও আটকে আছে তদন্ত। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, মেডিকেল রিপোর্ট না পাওয়ায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া যাচ্ছে না।

সূত্র জানায়, ঘটনার সঙ্গে দিহানের অন্য তিন বন্ধুর কোনো সংশ্লিষ্টতা এখনো পাওয়া যায়নি। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত এবং সঠিক বিচার নিশ্চিত করতে দিহানসহ তার পরিবারের সকল সদস্য এবং তার তিন বন্ধুর আলাদা আলাদা ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রকৃত আসামি চিহ্নিত এবং মূল ঘটনা উদ্‌ঘাটনের লক্ষ্যে দিহান, তার তিন বন্ধু, বাসার দারোয়ান দুলাল এবং তার এক চাচাতো ভাইসহ মোট ছয় জনের পৃথক ডিএনএ প্রোফাইল তৈরি করা হয়েছে।

ইতিমধ্যে একাধিকবার তার তিন বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। পারিবারিকভাবে সচ্ছল দিহান। তাকে জামিনে মুক্ত করতে পরিবার নানাভাবে চেষ্টা-তদবির করছেন।
আনুশকার পারিবারিক সূত্র জানায়, সংশ্লিষ্ট থানা থেকে মামলার বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পাননি তারা।

ফোনে কথা হয় দিহানের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। সম্প্রতি ছেলের চিন্তায় স্ট্রোক করেছেন দিহানের বাবা। অসুস্থ হয়ে দীর্ঘদিন হাসপাতালে থাকলেও বর্তমানে লেক সার্কাসের বাসায় স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে রয়েছেন। করোনার আগে মার্চ মাসে দিহানের সঙ্গে কারাগারে দেখা করার সুযোগ পেলেও খুব বেশি কথা বলার সুযোগ হয়নি তাদের। পিবিআই সূত্র জানায়, গত ১৬ই মে মাস্টারমাইন্ডের শিক্ষার্থী আনুশকা হত্যা মামলাটি পিবিআইতে আসে।

পিবিআইয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, ডিএনএ ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এখনো পাওয়া যায়নি। রিপোর্ট পেলে প্রতিবেদন দেয়া যাবে। মেডিকেল রিপোর্ট না পাওয়ার কারণে প্রতিবেদন দিতে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানান তিনি। মামলার আসামি কতো জন জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, মামলার মূল অভিযুক্ত আসামি কতো জন হবে এটা তদন্তের পর বলা যাবে।

এদিকে সর্বশেষ ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ইয়াসমিন আরা প্রতিবেদন দাখিলের জন্য গত ৭ই এপ্রিল দিন ধার্য করলেও তা পিছিয়েছে। ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগকে ডিএনএ ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের জন্য একাধিকবার তাগিদ দিয়েও প্রতিবেদন পেতে ব্যর্থ হয় তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ডিএনএ এবং ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের জন্য অভিযোগপত্র দাখিল করা সম্ভব হচ্ছে না। ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সাবেক প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ জানিয়েছেন, আনুশকা হত্যা মামলার যেটা সবচেয়ে জরুরি বিষয় বিশেষ করে পুলিশি তদন্ত প্রতিবেদন এবং ডিএনএ এই প্রতিবেদনগুলো আমরা এখনো পাইনি। জানতে পেরেছি ডিএনএ রিপোর্ট হয়ে গেছে। পুলিশের কাছে ইতিমধ্যে আমরা চেয়েছি। এ বিষয়ে আমরা আদালতকেও ইতিমধ্যে চিঠি দিয়েছি। প্রয়োজনীয় এই প্রতিবেদনগুলো আমাদের হাতে এসে পৌঁছামাত্র ফরেনসিক প্রতিবেদন দেয়া হবে।

এ বিষয়ে পুলিশের রমনা অঞ্চলের উপ-কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, আনুশকার মায়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলাটি পিবিআইতে দেয়া হয়েছে। মামলাটি তদন্তের প্রায় শেষ পর্যায়ে চলে এসেছিল। সেখান থেকে মামলাটি এখন নতুন সংস্থার কাছে গেছে। এখন পর্যন্ত মামলার একজন আসামি উল্লেখ থাকলেও পরবর্তীতে ডিএনএ এবং ফরেনসিক প্রতিবেদনে যা আসবে তার উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত হবে। উল্লেখ্য, গত ৭ই জানুয়ারি দুপুরে নিজ বাসায় ডেকে নিয়ে বান্ধবী আনুশকাকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ ওঠে দিহানের বিরুদ্ধে। দিহান নিজেই ভুক্তভোগী আনুশকাকে ধানমণ্ডির আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সময় চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ বিষয়ে আনুশকার বাবা বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় হত্যা মামলা করেন।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security