রবিবার, এপ্রিল ৭, ২০২৪

দ্বিতীয় বিয়ে করায় স্বামীকে ছয় টুকরো করেন প্রথম স্ত্রী

যা যা মিস করেছেন

রাজধানী মহাখালীর আমতলী এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া ময়না মিয়ার খণ্ডিত লাশের রহস্য উদঘাটন করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। দ্বিতীয় বিয়ে করায় স্বামী ময়না মিয়াকে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে অচেতন করে হত্যা করেন প্রথম স্ত্রী ফাতেমা খাতুন। পরে লাশ ছয় টুকরো করে বস্তায় ভরে মহাখালী এলাকার সড়কে ফেলে দেন তিনি। আর খণ্ডিত মাথা ফেলেন বনানীর লেকে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত প্রথম স্ত্রী ফাতেমাকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছে স্বামী হত্যার নির্মম বর্ণনা দেন। আজ দুপুরে রাজধানীতে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ উত্তর বিভাগের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ। তিনি বলেন, রোববার (৩০ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডের আমতলী এলাকায় একটা নীল রঙের ড্রামের মধ্যে বনানী থানা পুলিশ একজন পুরুষ ব্যক্তির মাথাবিহীন দেহ উদ্ধার করে। একই রাতে ১১টার পর মহাখালী বাস টার্মিনালের এনা কাউন্টারের কাছে একটা ব্যাগের মধ্যে উরু থেকে খণ্ডিত দুইটি পা এবং কাঁধ থেকে খণ্ডিত দুইটি হাতের অংশ উদ্ধার করে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল পুলিশ।

এ বিষয়ে বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী ইউনিটের সঙ্গে সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ ভিকটিমের পরিচিতি শনাক্ত করার জন্য চেষ্টা চালায়।
আর ডিবির গুলশান বিভাগের একটি টিম নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে তার স্বামী নিখোঁজ হওয়ার বিষয় নিশ্চিত হয়।
ডিবির গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান বলেন, নিহত ব্যক্তি বনানীর কড়াইল এলাকাতে তার প্রথম স্ত্রী ফাতেমার সঙ্গে কয়েকদিন ধরে বসবাস করছিলেন। এই তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দা পুলিশ বনানী থানার একটি ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির কোম্পানি অফিস থেকে আসামি ফাতেমা খাতুনকে গ্রেপ্তার করে।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে মশিউর রহমান বলেন, গত ২৩ মে থেকে নিহত ময়না মিয়া কড়াইল এলাকায় তার প্রথম স্ত্রী ফাতেমার বাসাতেই অবস্থান করছিলেন। পারিবারিক কলহ, টাকা-পয়সা বণ্টন ও একাধিক বিয়েকে কেন্দ্র করে ময়না মিয়ার সঙ্গে তার মনোমালিন্য হয়। এক পর্যায়ে ফাতেমা পরিকল্পনা করে তার স্বামীকে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে নিস্তেজ করেন এবং পরবর্তীতে জবাই করে লাশ গুম করেন।
ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, পরিকল্পনা মোতাবেক কড়াইল এলাকা থেকে ফাতেমা দুই পাতা ঘুমের ট্যাবলেট কিনে শুক্রবার রাতে জুসের সঙ্গে স্বামীকে খাইয়ে দেন। সারারাত ও পরের সারাদিন তার স্বামী ঘুমে অচেতন থকার পর সন্ধ্যার দিকে কিছুটা সম্বিত ফিরে পেয়ে স্ত্রীকে বকাবকি করে মারধর করতে গিয়ে বিছানায় লুটিয়ে পড়েন। এ সময় ময়না মিয়া পানি পানি বলে আর্তনাদ করলে ফাতেমা ঘুমের ট্যাবলেট মেশানো জুস আবার তার মুখে ঢেলে দেন। এক পর্যায়ে ময়না মিয়া নিস্তেজ হয়ে খাটে পড়ে গেলে ফাতেমা তার ওড়না দিয়ে স্বামীর দুই হাত শরীরের সঙ্গে বেঁধে রাখেন এবং তার মুখ স্কচটেপ দিয়ে আটকে দেন। এরপর তার বুকের উপরে বসে বাসায় থাকা নতুন ধারালো স্টিলের চাকু দিয়ে স্বামীর গলা কাটা শুরু করেন।
তিনি বলেন, একপর্যায়ে ফাতেমার সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে ময়না মিয়া নিজের হাত মুক্ত করে ফাতেমার হাতে খামচি এবং কামড় বসিয়ে দেন। এতে ফাতেমার রাগ আরও বেড়ে যায়। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ময়না মিয়া ও ফাতেমা দুজনেই খাট থেকে পড়ে গেলে ফাতেমা ময়নার বুকের উপরে উঠে তার গলার বাকি অংশ কেটে ফেলেন। এভাবে রাত অতিবাহিত হলে সকালবেলা ফাতেমা লাশ শুম করার জন্য ধারালো চাকু দিয়ে ময়না মিয়া হাতের চামড়া ও মাংস কাটেন এবং ধারালো দা দিয়ে হাড় কেটে খণ্ডিত অংশকে তিনটি ভাগে রাখেন।
তিনি বলেন, একটি লাল রঙের কাপড়ের ব্যাগে মাথা, শরীরের মূল অংশকে একটি নীল রঙের পানির ড্রামে এবং খণ্ডিত দুই পা ও দুই হাতকে একটি বড় কাপড়ের ব্যাগে ঢুকিয়ে রাখেন ফাতেমা। এরপর তেরোশো টাকায় রিকশা ভাড়া করে প্রথমে আমতলী এলাকায় শরীরের মূল অংশ ফেলে দেন, পরবর্তীতে মহাখালী এনা বাস কাউন্টারের সামনে খণ্ডিত দুই হাত, দুই পা ভর্তি ব্যাগ রেখে দিয়ে চলে আসেন বাসায়। সেখান থেকে খণ্ডিত মাথা রাখা ব্যাগটি নিয়ে বনানী ১১ নম্বর ব্রিজের পূর্ব পাশ থেকে গুলশান লেকে ফেলে দিয়ে বাসায় আসেন ফাতেমা।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security