বুধবার, এপ্রিল ২৪, ২০২৪

আসলামের আসনে নৌকা চান ৬০ জন

যা যা মিস করেছেন

আসলামুল হক আসলামের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া ঢাকা-১৪ আসনে নৌকা প্রতীক পেতে চান অন্তত ৬০ জন। এর মধ্যে দলের ত্যাগী-পরীক্ষিত নেতা-কর্মী যেমন আছেন, তেমনি আছেন ২০০৯ সালের পর নব্য লীগার। পিছিয়ে নেই ব্যবসায়ী নেতা, অভিনেতা ও পাতি নেতারাও। বিএনপি উপনির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেওয়ায় নৌকা পেতে মরিয়া তারা। কারণ নৌকা পেলেই বিজয়। এ ধারণায় উপনির্বাচনেও প্রার্থীর ছড়াছড়ি। এতে রয়েছেন ডামি প্রার্থীও।

আগে বিএনপির রাজনীতি করতেন, এখন তারাও নৌকা চায়। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না হলেও কখনো আসলামের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে, কখনো ঈদ শুভেচ্ছার পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন সাঁটিয়ে এলাকায় তারা প্রার্থিতা জানান দিচ্ছেন। কখনো নির্বাচনী এলাকায় না গেলেও কেউ কেউ এখন জনদরদি সেজে বিতরণ করছেন খাদ্য সামগ্রীসহ করোনা প্রতিরোধ সামগ্রী। সরেজমিনে ঢাকা-১৪ (মিরপুর, দারুসসালাম, শাহআলী, রূপগঞ্জ (আংশিক) এলাকা নিয়ে গঠিত আসনে ঘুরে ও নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। দলীয় সূত্রমতে, ঢাকা-১৪ আসনে জনপ্রিয় ও সাংগঠনিকভাবে দক্ষ প্রার্থী খুঁজছে আওয়ামী লীগ। এ ব্যাপারে দলের হাইকমান্ডের নির্দেশে সাংগঠনিক ও একাধিক সংস্থা মাঠ জরিপ করছে। দলের জন্য নিবেদিত, নিজ এলাকায় সামাজিক কর্মকান্ড সম্পৃক্ত ও অধিকতর জনপ্রিয়-এমন যোগ্য নেতা খুঁজছেন তারা। এ আসনে এখন পর্যন্ত ৬০ জনের অধিক প্রার্থীর নাম শোনা গেলেও আসলামুল হকের মতো জনপ্রিয় দক্ষ প্রার্থী খুঁজছে আওয়ামী লীগ। আর কে হবেন আসলামুল হকের যোগ্য উত্তরসূরি তা নিয়ে নানা হিসাব কষছেন নীতিনির্ধারকরা।

ইতিমধ্যে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ত্রাণ কার্যক্রমের মাধ্যমে নির্বাচনী এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্য-সহযোগিতা করে নিজের পরিচয় জানান দিচ্ছেন। উপনির্বাচনে এত প্রার্থী হওয়ার কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা গেছে, এ নির্বাচনী এলাকার মধ্যে রয়েছে, গাবতলী পশুর হাট, বাস টার্মিনাল, ট্রাক টার্মিনাল, বালু ও পাথর ঘাট, বড় বড় শপিং মল, ফুটপাথ, বোটানিক্যাল গার্ডেন, মিরপুর চিড়িয়াখানার ইজারা, খেয়াঘাট, মাজার, মাছের আড়তসহ বিভিন্ন সরকারি সম্পত্তি। তাই অনেকের দৃষ্টি এ আসনটিতে। দলীয় মনোনয়ন পেলেই নিশ্চিত বিজয় এই ধারণাও প্রার্থীদের মধ্যে। এমপি হলেই সবকিছুর নিয়ন্ত্রক হওয়া সহজ। তাই এত প্রার্থীর ছড়াছড়ি। ঢাকা-১৪ আসনে উল্লেখযোগ্য প্রার্থীরা হলেন- প্রয়াত আসলামুল হকের স্ত্রী মাকসুদা হক, সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তর যুব মহিলা লীগের সভাপতি সাবিনা আক্তার তুহিন, দারুস সালাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম মাজহারুল আনাম, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোবাশ্বের চৌধুরী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান, দারুস সালাম থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ফরিদুল হক হ্যাপী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সদস্য দেলোয়ার হোসেন, শাহ আলী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আগা খান মিন্টু, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার দেওয়ান আবদুল মান্নান, মিরপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম হানিফ, মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিরিন রোকসানা, ফুওয়াং ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিআইপি ড. আরিফ আহমেদ চৌধুরী, কাউন্সিলর মুজিব সারোয়ার মাসুম ও আবু তাহেরও দলীয় মনোনয়ন চান। এ ছাড়া ঢাকা-১৪ আসনের বাসিন্দা না হলেও নৌকা পেতে চান ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, ঢাকা-১৬ আসনের এমপি ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লার ভাই এখলাসউদ্দিন মোল্লা, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল। এ ছাড়াও ব্যবসায়ী মো. লুৎফর রহমান, অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজলও নৌকা পেতে চান। তিনি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্টার শেয়ার করার মাধ্যমে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। এ নির্বাচনী এলাকায় ৬০ জনের অধিক প্রার্থী বিভিন্ন ভাবে দলের হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন। এলাকায় নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে তারা যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন।
প্রয়াত আসলামুল হকের স্ত্রী মাকসুদা হক বলেন, আমার স্বামী এলাকার মানুষকে ভালোবাসতেন। তিনি এলাকার উন্নয়নে অনেক কাজ হাতে নিয়েছেন। কিছু কাজ সমাপ্ত হয়েছে, কিছু কাজ বাকি রয়েছে। স্বামীর অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করতে নৌকার হাল ধরতে চাই। আমাদের অভিভাবক বঙ্গবন্ধুকন্যা যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটাই চূড়ান্ত। সর্বশেষ দুই জাতীয় নির্বাচনে আসলামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মাঠে ছিলেন সাবিনা আক্তার তুহিন। মনোনয়ন বঞ্চিত হলেও হাল ছাড়েননি তিনি। তুহিন বলেন, এই এলাকায় আমার বেড়ে ওঠা। বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে ২১ দিনের কোলের সন্তানকে রেখে জেল খেটেছি। নির্যাতনের ক্ষত আজও শরীরে বহমান। বিগত দিনেও আমি মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলাম। এবার আমি আশাবাদী দল আমাকে মনোনয়ন দেবে। আরেক প্রার্থী মোবাশ্বের চৌধুরী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। এর আগে তিনি ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতির মাধ্যমে এলাকায় পরিচিত হয়ে ওঠেন। তিনি বলেন, আমি প্রতিটি এলাকায় যাচ্ছি। মানুষের সাড়া পাচ্ছি। দল মনোনয়ন দিলে আসনটি দলকে উপহার দিতে পারব। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে আরও আছেন দারুস সালাম থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা কাজী ফরিদুল হক হ্যাপী। তিনি আসলামুল হকের ঘনিষ্ঠ নেতা হিসেবে পরিচিত। বিগত নির্বাচনেও মনোনয়ন চেয়েছিলেন। এবারও মনোনয়ন পেতে মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ছাত্রলীগ, যুবলীগ হয়ে এখন থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছি। গত নির্বাচনে আমি মনোনয়ন চেয়েছিলাম। এবারও চাইব। নেত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এ বি এম মাজহারুল আনাম বলেন, মিরপুর বাংলা কলেজ ছাত্রসংসদের জিএস ছিলাম। ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম। দল আমাকে মনোনীত করলে বিজয়ী হতে পারব। সিআইপি ড. আরিফ আহমেদ চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন এলাকার মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে ছিলাম। জনপ্রতিনিধি হিসেবে এলাকার মানুষের কাছে থাকতে চাই।

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security