মোঃরাসেল আহম্মেদ (বগুড়া প্রতিনিধি) :
পঞ্চম ধাপে ২৯ পৌরসভা নির্বাচনের মধ্যে শুধু বগুড়ায় বিএনপি প্রার্থী জয় পেয়েছেন। ২০ হাজার ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সন্তুষ্ট। তবে তার বিশাল পরাজয়ের জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং তৃণমূল নেতাদের দায়ী করেছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী।
এদিকে তৃণমূল নেতারা বলছেন, জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় নৌকার পরাজয় হয়েছে। তারা ওইসব নেতাদের চিহ্নিত করে দল থেকে সরিয়ে দিতে সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জানা গেছে, রোববার ইভিএম মেশিনে বগুড়া পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। রাতে জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার মাহবুব আলম শাহ ফলাফল ঘোষণা করেন। বিএনপি প্রার্থী রেজাউল করিম বাদশা ৮২ হাজার ২১৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হন। তার নিকটতম হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) আবদুল মান্নান আকন্দ। ‘জগ’ প্রতিকে তিনি পেয়েছেন, ৫৬ হাজার ৯০ ভোট।
এখানে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবু ওবায়দুল হাসান ববি ২০ হাজার ৮৯ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন।
এছাড়া সাধারণ ২১ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিতরা আটটি, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীরা দুটিতে, বিএনপি সমর্থিতরা সাতটিতে, বিএনপি বিদ্রোহীরা দুটিতে এবং জামায়াত সমর্থিতরা দুটিতে জয় পেয়েছেন। এছাড়া সাতটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে জামায়াত সমর্থিতরা তিনটি, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একটি করে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা দুটি বিজয়ী হয়েছেন।
এদিকে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবু ওবায়দুল হাসান ববি বিএনপি প্রার্থী রেজাউল করিম বাদশার কাছে ৬২ হাজার ১২৮ ভোটে পরাজিত হওয়ায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে প্রচণ্ড ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্ষমতাসীন দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, নির্বাচন এলে বিএনপি-জামায়াতে কোন্দল নিরসন হয়; আর আওয়ামী লীগে বৃদ্ধি পায়। নেতারা দল গঠন ও কর্মী সংগ্রহের চেয়ে নিজেদের মধ্যে কোন্দল নিয়ে ব্যস্ত। কে কাকে বিপদে ফেলবে এ নিয়ে চিন্তায় ব্যস্ত।
বগুড়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু ওবায়দুল হাসান ববিকে বগুড়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ায় বঞ্চিত কোনো কোনো নেতা ক্ষুব্ধ হন।
আবার অনেকে ব্যক্তিস্বার্থে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নেন। তারা ধানের শীষের প্রার্থীকে ভোট দিতে কাজ শুরু করেন। কর্মী নিয়োগ দিয়ে জনগণকে ধানের শীষে ভোট দিতে অনুপ্রাণিত করেন। আবার এ ব্যাপারে টাকাও বিনিয়োগ করা হয়।
এসব কারণে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর শোচনীয় পরাজয় ঘটে। তারা দলের জন্য ক্ষতিকর এসব নেতাদের চিহ্নিত ও তাদের অবিলম্বে সংগঠন থেকে বের করে দিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ প্রসঙ্গে পরাজিত মেয়র প্রার্থী বগুড়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু ওবায়দুল হাসান ববি জানান, বগুড়া সদর আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী টি জামান নিকেতা ৩২ হাজার ২৯৭ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছিলেন। তাই তিনি (ববি) কম ভোট পাননি। এরপরও তিনি তার পরাজয়ের জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মান্নান আকন্দ ও তৃণমূল নেতাদের দায়ী করেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী টাকা ছিটিয়ে আওয়ামী লীগের ভোট নষ্ট করেছেন বলে দাবি করেন।
ববি আরও বলেন, অনেকে দীর্ঘদিন কমিটিতে থাকায় তারা দুর্বল হয়ে পড়েছেন। তাই দলকে চাঙ্গা করতে আগামীতে ওয়ার্ড থেকে কমিটি পুন:গঠনের কাজ শুরু করতে হবে।
তথ্যসূত্রঃযুগান্তর