বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ৪, ২০২৪

ভারতের পুলিশ ক্রাইম ব্রাঞ্চের সহায়তায় বাংলাদেশের ফাঁসির আসামী মাসুম গ্রেফতার

যা যা মিস করেছেন

খ.ম. নাজাকাত হোসেন সবুজ বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলার শরণখোলা উপজেলায় ২০০৫ইং সালের ৬ জুন, রাত অনুমান ১০:০০ টার দিকে উপজেলার মধ্য নলবুনিয়া গ্রামের মৃত সিদ্দিক তালুকদারের ছেলে মোবাইল ফোন ও ফ্ল্যাক্সি ব্যবসায়ী মোঃ জাহিদুল ইসলাম (২৫) কে পার্শ্ববর্তী শিং বাড়ী গ্রামের আদম আলী হাওলাদারের ছেলে মাসুম হাওলাদার ও তার সন্ত্রাস বাহিনী বাচ্চু, মনির, গফ্ফার, জাকিরসহ আরও কয়েকজন সন্ত্রাসী মিলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে।

ফাঁসির আসামী মাসুমকে ইন্টারন্যাশনাল পুলিশের (ইন্টারপোল) বাংলাদেশে নিযুক্ত (ঘঈচ) কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ভারতের ক্রাইম ব্রাঞ্চ পুলিশ ষ্টেশন দিল্লীতে জানানোর পর স্পেশাল টাক্স ফোর্স (ঝঞঋ) দিল্লীর ক্রাইম ব্রাঞ্চ পুলিশ ষ্টেশনে কর্মরত এ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অব পুলিশ (অঈচ) মিস্টার পংকজ শিং এর নেতৃত্বে দিল্লী পুলিশের এস.আই অশোক কুমার, বিজয় কুমার, রাজীব কুমার, এ.এস.আই বিনয় কুমার, ভীর শিং সহ একদল চৌকশ অফিসার গত ২৫ ডিসেম্বর ২০২০ ইং তারিখ দিল্লীর খানপুর টি পয়েন্ট থেকে হত্যা মামলার প্রধান আসামী মাসুমকে গ্রেফতার করে দিল্লী জেল হাজতে প্রেরণ করেন।

ঘটনা সূত্র এবং হত্যা মামলার এজাহারের নথীর মাধ্যমে জানা যায়, ২০০৫ সালের ৬ জুন রাতে জাহিদুল তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাড়ীতে না যাওয়ায় আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীরা অনেক খোঁজাখুজির পর তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরে কল করেও সেটি বন্ধ পায়। পরের দিন ৭ জুন বিকেল অনুমান ৪:৩০ মিনিটের দিকে লোক মুখে জানতে পারে মধ্য নলবুনিয়ার একটি মাঠে জাহিদুলের লাশ পড়ে আছে।

তাৎক্ষণিক জাহিদুলের পিতাসহ আত্মীয়-স্বজনরা মাঠে ছুটে গিয়ে দেখতে পায় ধারালো অস্ত্র দ্বারা জবাই করা হাত, পা সহ পুরুষ লিঙ্গ কাটা বিবস্ত্র অবস্থায় পড়ে আছে জাহিদুল।

খবর পেয়ে শরণখোলা থানা পুলিশ জাহিদুলের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট মর্গে প্রেরণ করে। ওই দিন ৭ জুন ২০০৫ ইং তারিখ মৃত জাহিদুলের বাবা মোঃ সিদ্দিকুর রহমান বাদী হয়ে মাসুম সহ ৫ জনকে আসামী করে শরণখোলা থানায় একটি লিখিত এজাহার দাখিল করে।

শরণখোলা থানার মামলা নং-০৬, তারিখ-০৭/০৬/০৫ ইং, ধারা-৩৬৪/৩০২/৩৪ দঃ বিঃ। মামলাটি তদন্তের জন্য তৎকালীন এস.আই মোঃ আব্দুল বাতেনের উপর ন্যাস্ত হয়। তদন্তকারী অফিসার হত্যা মামলার সকল আলামত জব্দ সহ ময়না তদন্তের সুরতহাল রিপোর্ট এবং বাদী ও সাক্ষীদের জবানবন্দী ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬১ ধারায় লিপিবদ্ধ করেন।

হত্যা মামলা দায়ের পূর্বেই আসামী মাসুম ও তার সঙ্গীরা ঢাকা, খুলনা, চিটাগাং সহ বিভিন্ন এলাকায় পালিয়ে যায়। বেশ কয়েক মাস পরে বিভিন্ন থানার পুলিশ কর্মকর্তারা বিভিন্ন এলাকা থেকে সকল আসামীদের গ্রেফতার করে বাগেরহাট জেলা বিজ্ঞ জজের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।

পরে আসামী গংরা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে নিজ নিজ বাড়ীতে অবস্থান করে এবং হত্যা মামলা প্রধান আসামী মাসুম পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতে পালিয়ে যায়।

বাকী আসামীরা উচ্চ আদালত থেকে বেকশুর খালাস পান। তবে ভারতের দালাল চক্রের সদস্য আলামিন ঢালী ওরফে কালী আলামিন, লিটন ঢালী, রহিম ঢালী এবং মোঃ আলামিন মাসুমকে বাঁচাতে ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে সুপারিশ চালিয়ে যাচ্ছে।

মৃত জাহিদুলের মা মমতাজ বেগম গণমাধ্যমকে জানান, আমি অনেক বছর আগে সন্তান হারিয়েছি, আমার বুকের মধ্যে সন্তান হারানোর কষ্ট কেউ বোঝে না। আমাদের আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে বাকী আসামীরা হাইকোর্ট থেকে বেকশুর খালাস পায়। কিন্তু আমার সন্তানকে তারা সবাই মিলে নির্মমভাবে হত্যা করে। সরকার ও প্রশাসনের কাছে আমার করজোর অনুরোধ প্রধান আসামী মাসুমকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনা সহ সকল আসামীদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান করা হোক।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাগেরহাট জেলা পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় গণমাধ্যমকে জানান, মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামীকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার জন্য ইন্টারন্যাশনাল পুলিশের (ইন্টারপোল) বাংলাদেশে নিযুক্ত (ঘঈচ) কর্মকর্তাদের মাধমে সুপারিশ চলমান। তবে সম্পূর্ণ আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত কোন বিষয় প্রকাশ করা যাবে না।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security