নাট্যব্যক্তিত্ব ও প্রবীণ অভিনেতা নাট্যজন আলী যাকের আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) ৭৬ বছর বয়সে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ তথ্যটি নিশ্চিত করে বলেন, ‘যাকের ভাই গত কয়েকদিন ধরেই বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শুক্রবার ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।’
তিনি জানান, শুক্রবার বেলা ১১টায় শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আলী যাকেরের মরদেহ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে নেওয়া হবে। এরপর দাফন, তবে কোথায় দাফন হবে, এখনো সেটা ঠিক হয়নি।
বেশ কয়েক বছর ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন আলী যাকের। সেই চিকিৎসার অংশ হিসেবে নিয়মিত থেরাপি চলছিল তাঁর। গত সপ্তাহে শারীরিক সমস্যা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শে তাঁকে সিসিইউতে নেওয়া হয়।
কিছুটা সুস্থ হলে গত শনিবার বাসায় নেওয়ার পর রোববার আবারও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সোমবার করোনা পরীক্ষা করানোর পর তার রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
আলী যাকের দেশের একজন গুণী ও বর্ষীয়ান অভিনেতা। ছোট পর্দায় অভিনয়ের সঙ্গে সঙ্গে মঞ্চেও দাপুটে বিচরণ ছিল তার। মঞ্চে নুরুলদীন, গ্যালিলিও ও দেওয়ান গাজীর চরিত্রে অভিনয় করে জয় করেছেন দর্শক হৃদয়। এছাড়াও ‘অচলায়তন’, ‘বাকী ইতিহাস’, ‘সৎ মানুষের খোঁজে’, ‘তৈল সংকট’, ‘এই নিষিদ্ধ পল্লীতে’, ‘কোপেনিকের ক্যাপ্টেন’সহ বেশ কয়েকটি মঞ্চ নাটকের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
আলী যাকের ১৯৭২ সালের আরণ্যক নাট্যদলের ‘কবর’ নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে পথচলা শুরু করেন। ১৯৭৩ সালে যোগ দেন নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ে। আমৃত্যু এই নাট্যদলেই ছিলেন তিনি।
আলী যাকের নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি ছিলেন। তিনি একুশে পদক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী পদক, নরেন বিশ্বাস পদকসহ অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। ছিলনে বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি গ্রুপের চেয়ারম্যান। তার স্ত্রী অভিনয়শিল্পী সারা যাকের, ছেলে অভিনেতা ইরেশ যাকের ও মেয়ে শ্রেয়া সর্বজয়া।