করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমাতে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এতে কর আদায় প্রক্রিয়া আরও সহজ হবে বলেও মনে করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। প্রাথমিকভাবে রাজধানীর কর অঞ্চল-৬ এ এই কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। আগামী বছরের মধ্যে দেশের সব কর অঞ্চলে এই সুবিধা চালু হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
রবিবার অলাইনে কর প্রদান অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন এনবিআর চেয়ারম্যান। কর অঞ্চল-৬ এর কর কমিশনার মোহাম্মদ জাহিদ হাছানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাখেন এনিবআর সদস্য হাফিজ আল মোরশেদ। এই কার্যক্রম রাজস্ব আহরণ ও গ্রাহকদেও সেবা প্রদানে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে সভায় জানানো হয়। তাই এই কার্যক্রম দেশের সকল কর অঞ্চলে দ্রুত ছড়িয়ে দেয়ারও ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
কর অঞ্চল-৬ এ ১ লাখ ৩৫ হাজার করদাতা রয়েছেন। করোনাভাইরাস মহামারীর সময়ে ঘরে বসে রির্টান জমা দিতে বড় ভূমিকা রাখবে এই কার্যক্রম। এর আগে তিনবছর অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে পেরেছেন করদাতারা। ভিয়েতনামের এফপিটি ইনফরমেশন সিস্টেম করপোরেশনের একটি সফটওয়্যারে অনলাইনে করবিবরণী দেয়া যাচ্ছিল। ওই কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় জুনে সেই সুবিধাটি বন্ধ হয়ে যায়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, আমার কাছে মনে হয়, টিআইএনধারীদের কাছে টাকা দেয়াটা কষ্টের বিষয় নয়। কিন্তু জমা দেওয়া সমস্যা। এই সমস্যাটা দূর করতে আমরা সরাসরি অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সুযোগ দিতে একটি সফটওয়্যার তৈরি করেছি। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে এখন থেকে ঢাকা কর অঞ্চল-৬ এর টিআইএনধারী করদাতারা সরাসরি অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। বলেন, অনলাইনে রিটার্ন সাবমিশনের প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করলাম। আমরা এটাকেই ডেভলপ করব। এটার উপর ভিত্তি করে ঢাকার অন্যান্য কর অঞ্চলগুলোতেও অনলাইনে রিটার্ন দাখিল কার্যক্রম হাতে নেয়া হবে।
তিনি বলেন, বছরের শুরুর দিকেই যদি এই কার্যক্রম শুরু করা যেত তাহলে এবছরের মধ্যে অন্যান্য কর অঞ্চলগুলোকে অনলাইনের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব। ইনশাল্লাহ আগামী বছর থেকে দেশের সবগুলো কর অঞ্চলের করদাতারা অনলাইন সেবা পাবেন। অনলাইনে রিটার্নের চালান জমা হওয়ার সাথে সাথে গ্রাহক প্রাপ্তি স্বীকারপত্র পাবেন বলে জানান তিনি।
জানা গেছে, করোনা মহামারীর কারণে এবার কর আদায় কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যেও প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ায় কর ও শুল্ক আদায়ও কমে গেছে। এছাড়া করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এবার কর মেলার আয়োজন করা হয়নি। মানুষ যাতে ঘরে বসেই হয়রানিমুুক্তভাবে কর প্রদান করতে পারেন সেজন্য গত কয়েক বছর ধরেই চেষ্টা করছে এনবিআর কর্তৃপক্ষ। তবে অনলাইনে কর প্রদানের বিষয়টি পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। আগামী বছরের মধ্যে দেশের সব করাঞ্চলে অনলাইন সেবা কার্যক্রম শুরু করা যাবে বলে উদ্যোগ রয়েছে এনবিআরের।