নিপুণ। অভিনেত্রী ও মডেল। দুই বছর কোনো সিনেমায় দেখা যায়নি তাকে। অবশেষে ‘বীরত্ব’ নামে নতুন সিনেমার মাধ্যমে বিরতি ভাঙলেন তিনি। এই সিনেমায় অভিনয় ও অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে-
তিন বছর বিরতির পর কোনো সিনেমায় অভিনয় করতে যাচ্ছেন। অভিনয় থেকে এতদিন দূরে থাকার কারণ কী?
অভিনয় করব না- এমন ঘোষণা কখনও দেইনি। ব্যবসায়িক কাজ নিয়ে ব্যস্ততা ছিল; তার পরও যতটুকু সময় পেয়েছি, অভিনয়ের জন্য সময় বের করার চেষ্টা করেছি। সিনেমায় অভিনয় করা না হলেও নাটক ও ওয়েব সিরিজে কাজ করেছি। সিনেমার জন্য আসলে যে ধরনের গল্প ও চরিত্র খুঁজছিলাম, তা এতদিন পায়নি বলেই কাজ করা হয়ে ওঠেনি। একটু দেরিতে হলেও এবার পছন্দের একটি গল্পে কাজ করার হয়েছে, যেজন্য বিরতি ভেঙে আবার সিনেমায় অভিনয় শুরু করলাম।
আপনার আগের সিনেমাগুলো থেকে ‘বীরত্ব’র চরিত্র কি একেবারেই আলাদা?
আগের কোনো সিনেমার চরিত্রের সঙ্গে ‘বীরত্ব’র লুৎফা চরিত্রের মিল খুঁজে পাওয়া যাবে না। সিনেমায় ফেরার জন্য লুৎফার মতো চরিত্র খুঁজছিলাম। যেজন্য পরিচালক সাইদুল ইসলাম রানা যখন লুৎফা চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন, তখন এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাবিনি। গল্প, চরিত্র এবং নির্মাণ পরিকল্পনা শুনে ভালো কিছু হবে বলেই মনে হয়েছে।
সাইদুল ইসলাম রানা এর আগে কোনো সিনেমা পরিচালনা করেননি। তার পরও ‘বীরত্ব’ সিনেমা নিয়ে এতটা আশাবাদী হওয়ার কারণ কী?
ভালো কিংবা ভিন্ন ধরনের ছবি যেটাই বলি না কেন, তার প্রথম শর্ত গল্প, সংলাপ ও চিত্রনাট্য ভালো হতে হবে। ‘বীরত্ব’ ছবির গল্প পড়েই মনে হয়েছে, এ সময়ের অন্যান্য ছবির গল্প থেকে এটি অন্যরকম। সাইদুল ইসলাম রানা এর আগে কোনো সিনেমা পরিচালনা না করলেও নির্মাণ সম্পর্কে তার যথেষ্ট ধারণা আছে। এর আগে ছোট পর্দার জন্য তিনি কাজ করেছেন। জানেন একটি ভালো কাজের জন্য কীভাবে পরিকল্পনা সাজাতে হয়। সিনেমার পুরো টিমকে যেভাবে কাজে লাগিয়েছেন, তাতে পরিকল্পিতভাবেই কাজটি হচ্ছে। আশাবাদী হয়ে ওঠার এটাই আসল কারণ।
‘বীরত্ব’ সিনেমাটি ব্যবসায়িক সাফল্য পেলে কী বড় পর্দায় নিয়মিত দেখা যাবে?
সিনেমার সাফল্য বা ব্যর্থতার সঙ্গে কাজের কোনো সম্পর্ক নেই। যতদিন অভিনয় করব, ততদিন চেষ্টা থাকবে ভালো কিছু করার। ব্যবসা দেখাশোনার পাশাপাশি জনসচেতনমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত আছি বলেই আগের মতো অভিনয়ে সময় দিতে পারব না। তাই বলে অভিনয় থেকে বিদায় নিচ্ছি- এটা ভাবলেও ভুল হবে।
চলচ্চিত্র অঙ্গনের অবস্থা এখন কেমন বলে মনে হচ্ছে?
চলচ্চিত্র অঙ্গনের অবস্থা যে আগের মতো নেই, সেটা তো কমবেশি সবারই জানা। ২০০৬ সালে আমি যখন অভিনয় শুরু করি, তখনও প্রতি ঈদে ১০ থেকে ১২টি সিনেমা মুক্তি পেত। এরপর কমতে কমতে সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাত থেকে আটটি। আর এখন তো দুই থেকে তিনটির বেশি সিনেমা মুক্তি ছবি দিতেই অনেকের ঘাম ঝরে।
এত গেল সিনেমার কথা। শিল্পীদের মধ্যে আগের আন্তরিকতা চোখে পড়ে না। সবাই সবার দোষ খোঁজে। কে কী করল, না করল তা নিয়েই দিনভর আলোচনা-সমালোচনা চলে। অথচ কেউ এটা বুঝতে চায় না, একে অন্যের দোষ খোঁজার কোনো মানে নেই। বরং নিজের কাজের ভুল-ত্রুটি খুঁজে তা শুধরে নিলেই ভালো কিছু হবে। চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নতির জন্য সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করে যেতে হবে।