শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৪

বরখাস্ত হতে পারেন কাউন্সিলর ইরফান আহমেদ সেলিম

নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফের উপর উগ্র হামলার ঘটনায় দাপুটে সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের পুত্র ইরফান শিগগিরই কাউন্সিলর পদ থেকে বরখাস্ত হতে যাচ্ছেন বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, সিটি করেপোরেশনের নিয়ম অনুযায়ী কোনো জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হলে লিখিত আকারে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় জনপ্রতিনিধি বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেবে। পুরোন ঢাকার ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইরফানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং আইন অনুযায়ী ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে এক বছর সাজা দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ আসা মাত্রই কাউন্সিলর পদ থেকে ইরফানকে বরখাস্ত করা হবে।

স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন ২০০৯ (সংশোধিত ২০১১) অনুযায়ী এ ধরনের অপরাধের জন্য মেয়র বা কাউন্সিলররা বরখাস্ত হয়ে থাকেন। এ আইনের ১২ ধারায় মেয়র ও কাউন্সিলরদের বরখাস্ত করার বিষয়ে বলা হয়েছে।

প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী এ ধরনের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে স্থানীয় সরকার বিভাগকে অবহিত করতে হয়।

উপ-ধারা ১২ (১) বলা হয়েছে, যে কোন সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বা কাউন্সিলরের অপসারণের জন্য ধারা ১৩ এর অধীন কার্যক্রম আরম্ভ হয়েছে অথবা তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার অভিযোগ আদালত কর্তৃক গৃহীত হয়েছে। সে ক্ষেত্রে সরকার লিখিত আদেশের মাধ্যমে ক্ষেত্রমত, মেয়র বা কোন কাউন্সিলরকে বরখাস্ত করতে পারবে।

এ আইনের ১৩ ধারায় মেয়র এবং কাউন্সিলরগণের অপসারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে। ১৩ এর উপধারা ১ এর খ-তে বলা হয়েছে, নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে আদালত কর্তৃক দণ্ডিত হলে তিনি অপসারিত হবেন। ১৩ এর ঘ-তে বলা হয়েছে, অসদাচরণ বা ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন তাহলেও তিনি অপসারিত হবেন।

এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মেয়র বা কাউন্সিলররা আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত হলে তিনি বরখাস্ত হন। তবে এ প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করতে হলে সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশন থেকে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে হয়।’

এর আগে অভিযান চলাকালে ঘটনাস্থল থেকে সময় সংবাদের বিশেষ প্রতিনিধি ওমর ফারুক জানিয়েছেন, দুপুর ১২টার দিকে অভিযান শুরু হয়। ৮তলা ভবনের প্রতিটি ফ্লোরে অভিযান চলে। ইরফানের বাসা থেকে বেশ কিছু অবৈধ জিনিস উদ্ধার করে র‌্যাব। এর মধ্যে আছে একটি আগ্নেয়াস্ত্র, যেটা অবৈধ। সেটির কাগজপত্র এখনও দেখাতে পারেননি তিনি। এছাড়া,  ৫-৬ লিটার মদ ও ৪০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয় বাড়িটি থেকে। পাওয়া গেছে বেশ কিছু বিয়ারের ক্যান।

উল্লেখ্য, ২৫ অক্টোবর রাতে ঢাকা-৭ আসনের এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ‘সংসদ সদস্য’ লেখা সরকারি গাড়ি থেকে নেমে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধর করা হয়। রাতে এ ঘটনায় জিডি হলেও ২৬ অক্টোবর ভোরে হাজী সেলিমের ছেলেসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওয়াসিফ।

মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলাটি করা হয়েছে। আসামিরা হলেন, ইরফান সেলিম, এ বি সিদ্দিক দীপু, জাহিদ, মীজানুর রহমান ও অজ্ঞাতনামা আরও দুই/তিনজন।

মামলায় আরো বলা হয়, ইরফানের গাড়ি ওয়াসিমকে ধাক্কা মারার পর নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিম সড়কের পাশে মোটরসাইকেলটি থামান এবং গাড়ির সামনে দাঁড়ান। নিজের পরিচয় দেন। এরপরই গাড়ি থেকে কয়েকজন বের হয়ে ওয়াসিমকে কিলঘুষি মারেন এবং তার স্ত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। তারা মারধর করে ওয়াসিমকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যান।

পরে তার স্ত্রী, স্থানীয় জনতা এবং পাশে ডিউটিরত ধানমন্ডির ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা তাকে উদ্ধার করে আনোয়ার খান মডেল হাসপাতালে নিয়ে যান।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

সর্বশেষ