বুধবার, এপ্রিল ২৪, ২০২৪

কোভিড ভ্যাকসিনের জন্য বলি হতে চলেছে ৫ লাখ হাঙর!

যা যা মিস করেছেন

নভেল করোনাভাইরাস এখনও অচেনা শত্রু। তাই অন্ধকারে হাতড়েই আলোর খোঁজ চালাতে হচ্ছে বিজ্ঞানী-চিকিৎসকদের। করোনা ভ্যাকসিনের প্রতীক্ষায় এখন গোটা বিশ্ব। তবে এই উদ্বেগের মাঝে আরেকটি চিন্তা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, যা বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞদের কপালে ভাঁজ পড়েছে। করোনা ভ্যাকসিন তৈরি করতে পাঁচ লক্ষ হাঙর বলি হতে পারে। হ্যাঁ ঠিক দেখছেন আপনি। পাঁচ লক্ষ হাঙরকে মেরে ফেলা হবে করোনা ভ্যাকসিনের জন্য।

জানা গিয়েছে, এই বিপন্ন প্রাণির শরীরে এক ধরনের প্রাকৃতিক তেল নির্গত হয় যা ভ্যাকসিন তৈরিতে অত্যন্ত অপরিহার্য। হাঙরের দেহ থেকে নির্গত তেলই এখন দরকার বিজ্ঞানী-চিকিত্‍সকদের। অ্যাজুভ্যান্ট একপ্রকার স্ক্যালেন, যা হাঙরের লিভারের মধ্যে থাকে। সেই প্রাকৃতিক তেল পেতেই বর্তমানে হাঙর হত্যালীলার জন্য তৈরি হচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। এক টন স্ক্যালেন তৈরি করতে ৩ হাজার হাঙরকে মেরে ফেলতে হবে।

বিশ্বের সবাইকে একবার করে করোনা ভ্যাকসিন দিতে গেলে প্রায় আড়াই লক্ষ হাঙরকে মারতে হবে। যদি দুবার করে ভ্যাকসিনের প্রয়োজন হয়, তাহলে সেই সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়াবে পাঁচ লক্ষে। এমনটাই জানিয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার শার্ক অ্যালায়েজ নামে এক হাঙর সংরক্ষণ গ্রুপ।

প্রসঙ্গত, সব টিকা তৈরিতেই লাগে অ্যাজুভ্যান্ট। ল্যাটিনে যাঁকে বলে হেল্প (help)। বাংলায় সাহায্য। সেই অ্যাজুভ্যান্ট (adjuvant) হল একটি ফার্মাকোলজিক্যাল এজেন্ট। যা ভাইরাসের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনের রোধ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা অনেকাংশই বাড়িয়ে দেয়। আর সেই উপাদানটাই পাওয়া যায় হাঙরের লিভার থেকে। টিকার কার্যকরী ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে এর অপরিহার্য ভূমিকা রয়েছে। ফলে এটা থেকে পরিস্কার মানব সমাসজকে টিকিয়ে রাখতে হলে লক্ষ লক্ষ হাঙরের প্রাণ যাবে অচিরেই।

হাঙর ছাড়াও অন্যান্য সামদ্রিক প্রাণির দেহে পাওয়া যায়। কিন্তু হাঙরের লিভারে যে স্ক্যালেন পাওয়া যায় তা অন্যদের তুলনায় অনেক শক্তিশালী ও কার্যকরী। সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, মেকানিক তেল, কসমেটিক্স ও অন্যান্য ভোগ্যপণ্য তৈরির জন্য বছরে ৩০ লক্ষ হাঙর নিধন করা হয়। শুধু করোনা ভ্যাকসিনের জন্যই নয়, হাঙরের লিভার অয়েলের দাবি মেটাতে বহু বিপন্ন প্রজাতির হাঙরকে মেরে ফেলার কাজ হয়ে চলে বছরের পর বছর ধরে।

ব্রিটিশ ফার্মা জায়েন্ট GlaxoSmithKline করোনা ভ্যাকসিনের প্রায় ১০০কোটি ডোজ তৈরির করার প্রতিশ্রুতি জানিয়ে ঘোষণা করেছে। আর এই টিকা তৈরির কাজে ইতোমধ্যেই হাঙরে স্ক্যালেন ব্যবহার করা শুরু করে দিয়েছে ওই বিশ্ববিখ্যাত সংস্থাটি। এমনটা যদি হয়ে থাকে, তাহলে জীববৈচিত্র্যে পরিবর্তন তো ঘটবেই, বিপন্ন হাঙরগুলি হয়তো গোটা পৃথিবী থেকেই নিশ্চিহ্ণ হয়ে যেতে পারে।

ভ্যাকসিনের ডোজ তো দিনে দিনে বেড়েই যাবে। অন্যদিকে ডোজ তৈরির জন্য হাঙর নিধন অব্যাহতই থাকবে। এমন সঙ্কটের কথা ভেবেই চিন্তার ভাঁজ পড়েছ বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞদের কপালে। তবে কীভাবে হাঙর ছাড়াও স্কোয়ালিন পাওয়া যায় সে ব্যাপারে গবেষণা শুরু হয়েছে।

সিন্থেটিক স্কোয়ালিন ব্যবহার করলে ইনফ্লুয়েঞ্জার ভ্য়াকসিন তৈরিতে কোনও প্রভাব পড়বে কিনা তাও দেখছেন গবেষকরা। তবে করোনার ভ্যাকসিন তৈরিতে সেটা কতটা কার্যকরী হবে তা এখনও অন্ধকারে বিশেষজ্ঞমহল।

প্রসঙ্গত, গোটা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত প্রায় তিন কোটি মানুষ। মারণভাইরাসে মারা গিয়েছে ১০ লক্ষের বেশি মানুষ।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security