বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১৮, ২০২৪

আয় কমলেও করোনায় ব্যাংকের সিএসআর ব্যয় বেড়েছে ১২০ শতাংশ

যা যা মিস করেছেন

করোনার মধ্যে মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে মে মাস পর্যন্ত ব্যাংকিং লেনদেন প্রায় বন্ধ ছিল। এ সময়ে সীমিত পরিসরে ব্যাংক কার্যক্রম চালু থাকে। পাশাপাশি ব্যাংকের ঋণ আদায়ের ওপর শিথিলতা আরোপ করা হয়। সব মিলেই ব্যাংকগুলোর আয় তলানিতে নেমে যায়। কিন্তু এ সময়ে ব্যাংকের করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার (সিএসআর) আওতায় ব্যাংকগুলোর ব্যয় থেমে থাকেনি, বরং বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে।

গত বছরের জানুয়ারি-জুন ৬ মাসে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এই সিএসআর খাতে ব্যয় করেছিল ২৪০ কোটি টাকা। চলতি বছরের আলোচ্য সময়ে তা দ্বিগুণ বেড়ে হয় ৫২৮ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে সিএসআর খাতে ব্যয় বেড়েছে ১২০ শতাংশ। সর্বোচ্চ ব্যয় হয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খাতে। কোভিড-১৯ এর কারণে কর্মহীন জনগোষ্ঠীর মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করতে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে সবচেয়ে বেশি অনুদান গেছে এ খাতের। সিএসআর ব্যয় নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুসারে, খাতভিত্তিক সিএসআর ব্যয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খাতে। এ খাতে ৬ মাসে ব্যয় হয়েছে ১৩৮ কোটি টাকা, যা মোট সিএসআর ব্যয়ের ২৬ দশমিক ৮২ শতাংশ। আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যয় হয়েছে স্বাস্থ্য খাতে ৯৬ কোটি টাকা, যা মোট সিএসআর ব্যয়ের ১৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ। সংস্কৃতি খাতে ব্যয় হয়েছে সাড়ে ৮১ কোটি টাকা, যা মোট ব্যয়ের ৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ। শিক্ষায় ব্যয় হয়েছে ৬০ কোটি টাকা, যা মোট ব্যয়ের ১১ দশমিক ৬৮ শতাংশ। পরিবেশে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৪ কোটি টাকা, যা মোট ব্যয়ের ২ দশমিক ৬৭ শতাংশ।

জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো কর-পরবর্তী নিট মুনাফার অংশ থেকে সিএসআর খাতে ব্যয় করতে পারবে। সিএসআরে কত টাকা ব্যয় করা যাবে, তার কোনো সীমা বেঁধে দেয়া নেই। তবে কোন খাতে কত অংশ ব্যয় করতে হবে, তা নির্ধারণ করে দেয়া আছে। সিএসআর ব্যয়ের ৩০ শতাংশ শিক্ষায়, ২০ শতাংশ স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করার নির্দেশনা রয়েছে। করোনা মহামারীর জন্য স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। করোনায় স্বাস্থ্য খাতের গুরুত্ব বিবেচনায় এ খাতে সিএসআর ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা ২০ শতাংশ থেকে ৬০ শতাংশ উন্নীত করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংক থেকে সিএসআর ব্যয়ের তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে দাখিল করার পর তা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার আওতায় প্রধানত শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ ও করোনায় কর্মহীন মানুষের জন্য ত্রাণ বিতরণের জন্য ব্যয় করা হয়। আর ব্যাংকের এ ব্যয়ের বেশির ভাগই প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অনুদান হিসেবে দেয়া হয়েছে। এর বাইরে ব্যাংকগুলো তাদের বিভিন্ন শাখা অফিস, এনজিও এবং সরকারি সংস্থার মাধ্যমেও শীতার্তদের কম্বল বিতরণ এবং করোনায় দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে সহায়তা করেছে।

শিক্ষাখাতে ব্যয়ের মধ্যে ব্যাংকগুলো প্রধানত নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান কাজে ব্যয় করেছে।

ব্যাংকভিত্তিক সিএসআর ব্যয়ের চিত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বেশির ভাগ সিএসআর ব্যয়ই বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ব্যয় হয়েছে। ৫১৬ কোটি সিএসআর ব্যয়ের মধ্যে গত ৬ মাসে রাষ্ট্রায়ত্ত ও বিশেষায়িত ব্যাংক মিলে ৯ ব্যাংক সিএসআর খাতে ব্যয় করেছে মাত্র ২ কোটি ৫ লাখ টাকা; যা মোট সিএসআর ব্যয়ের মাত্র শূন্য দশমিক ৩৯ শতাংশ। ৪১টি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের ৩৮টি ব্যাংক সিএসআর খাতে ব্যয় করেছে ৪৯৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা, যা মোট সিএসআর ব্যয়ের ৯৬ দশমিক ২১ শতাংশ। তবে তিনটি বেসরকারি ব্যাংক যথাক্রমে আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক ও সীমান্ত ব্যাংক গত ৬ মাসে সিএসআর খাতে কোনো ব্যয় করেনি। অন্য দিকে ৯টি বিদেশী ব্যাংক সিএসআর খাতে ব্যয় করেছে ১৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, যা মোট সিএসআর ব্যয়ের ৩ দশমিক ৪ শতাংশ।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security