শুনতে কল্পকাহিনীর মতো মনে হলেও বিজ্ঞানীরা মঙ্গলে আলুর ফলানোর চেষ্টা করছেন। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা মঙ্গলের মাটিতে বিভিন্ন ধরনের শাক সবজি ফলানোর চেষ্টা করছে।
তারা পরীক্ষাটির জন্য সবচেয়ে প্রাণবন্ত বৈচিত্র্য পেতে পেরুর মরুভূমির মাটি ব্যবহার করছে, যেখানকার প্রাকৃতিক ভূমি অনেকটা মঙ্গলের মতো, জানিয়েছে ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড মিরর।
নাসা মঙ্গলে মানুষ পাঠানোর অভিযানকে সামনে রেখে সেখানে হিমায়িত টিউবের মাধ্যমে আলু পাঠানোর আশা করছে, যাতে মানুষ পৌছানোর আগেই সেগুলো বড় হয়ে উঠতে পারে।
এই ‘বৈজ্ঞানিক কল্পনাকে’ই বাস্তবে রূপ দিতে যাচ্ছে নেদারল্যান্ডসভিত্তিক ফাউন্ডেশন মার্স ওয়ান। ১০ বছরে তাদের একটি স্থায়ী উপনিবেশ তৈরি করার লক্ষ্যে একটি একমুখী ভ্রমণে মহাকাশচারী পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। ইলন মাস্কের স্পেসএক্স-এর এই দশকের মধ্যে মঙ্গলে মানুষ পাঠানোর ইচ্ছা রয়েছে, যেখানে মঙ্গলে যেতেই সময় লাগবে ৩০০ দিন।
এই গবেষণা নাসা এবং লিমার আন্তর্জাতিক আলু কেন্দ্র যৌথভাবে পরিচালনা করছে। তারা পৃথিবীর সবচেয়ে শুষ্ক জায়গা অ্যাটাকামা মরুভূমির ১৩০০ পাউন্ড মাটিতে ৬৫ প্রজাতির আলু ফলানোর চেষ্টা করছে। এই বিভিন্ন প্রজাতির উন্নতি লাভ হলে মঙ্গলের পরিবেশের মতো অবস্থায় এগুলো পরীক্ষা করা হবে।
যেহেতু মঙ্গলে গড় তাপমাত্রা -৬৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং এটা -১৭৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামতে পারে তাই সেখানে আলুর চাষ অবশ্যই কোনো গৃহের অভ্যন্তরে করতে হবে। মঙ্গলে উচ্চমাত্রার বিকিরণ রয়েছে এবং সেখানের মধ্যাকর্ষণ পৃথিবী থেকে ৬০ শতাংশ কম। সেখানে মাত্রাতিরিক্ত কার্বন-ডাই-অক্সাইড রয়েছে তাই আলুর ফলন করা কিছুটা চ্যালেঞ্জিং।
খাওয়া ছাড়াও আলুকে ব্যাটারি এবং ছাপানোর কাজে ব্যবহার করা যায়।
নাসা গবেষণাটি শুরু করেছে কিউরিওসিটি যানটি মঙ্গলে অবতরণ করে সেখানে পানির অস্তিত্ব পাওয়ার পর। পূর্বে মহাকাশচারীরা অ্যালুমিনিয়াম টিউবে সংরক্ষিত খাদ্যের উপর নির্ভর ছিলেন, কিন্তু বর্তমানে অনেক সুযোগ রয়েছে। আলু ছাড়াও নাসা চেষ্টা করছে সবুজ লেটুস ফলানোর, যা ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ফলানো হয়েছে।