ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগ তুলে নারায়ণগঞ্জে এক স্কুল শিক্ষককে পিটিয়ে জখম করার পর স্থানীয় সাংসদ সদস্যের উপস্থিতিতে কান ধরে উঠাবসা করানোর ঘটনায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কান ধরে দাঁড়িয়ে’ প্রতিবাদ জানিয়েছে একদল শিক্ষার্থী।
তবে ওই শিক্ষক বলছেন, তার বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। এর আগেও কয়েকবার বিভিন্ন ইস্যুতে ষড়যন্ত্র করে ব্যর্থ হয়ে সবশেষ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার মিথ্যা অভিযোগ তাকে অপদস্ত করা হয়।
মৌনবন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, এভাবে হয়রানির শিকার হলে শিক্ষকদের মর্যাদা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, সেটা আজ ভাববার বিষয়। এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়কে ত্বরান্বিত করবে।
তারা বলেন, মানবিক দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে শ্যামল কান্তি ভক্ত স্যারের প্রতি সহমর্মিতা জানাতেই এ কর্মসূচি। সংশ্লিষ্ট সকলের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে বলেও মন্তব্য করেন তারা।
ওই শিক্ষককে অপদস্ত করার তিনদিন পর বন্দর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আকম নুরুল আমিনকে প্রধান করে ৩ সদস্যের ওই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অপর দুই সদস্য হচ্ছেন উপজেলা প্রকৌশলী ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।
সোমবার (১৬ মে) তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, তারা ইতোমধ্যে ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলে প্রধান শিক্ষককে অপদস্ত করার নেপথ্যে ষড়যন্ত্রের তথ্য পেয়েছেন। এর মধ্যে একটি হলো, মসজিদের মাইকে মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে পরিস্থিতিকে উসকে দেয়া।
শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত এখন নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে পুলিশ হেফাজতে ভর্তি চিকিৎসাধীন। তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। হাসপাতালে কারো সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতেও রাজি হচ্ছেন না।
এদিকে, একজন শিক্ষককে কান ধরে উঠবস করানোর ঘটনায় বাংলাদেশকেই কান ধরে উঠবস করানো হয়েছে, এমন মন্তব্য করে শাহবাগে জমায়েতের ঘোষণা দিয়েছে ‘লেখক-শিল্পী-শিক্ষক-সাংস্কৃতিক কর্মীবৃন্দ’।
মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় তারা প্রতিবাদে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে জড়িতদের বিচার চাইছেন ব্যবহারকারীরা।