জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে পাকিস্তান। বুধবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে এই ঘটনাকে অত্যন্ত দুঃখজনক বলে বর্ণনা করা হয়েছে। এটাকে বিতর্কিত আদালতের মাধ্যমে বিচারিক হত্যা বলে অভিহিত করেছে পাকিস্তান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাফিস জাকারিয়া বিবৃতিতে বলেছেন, নেতাদের এভাবে একটি ত্রুটিযুক্ত বিচারপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে হত্যার মধ্য দিয়ে বিরোধী দলকে চাপের মধ্যে রাখাটা গণতন্ত্রের মূলমন্ত্রের বিরোধী। বাংলাদেশের যেসব মানুষ নিজামীকে পার্লামেন্টে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করেছিলেন তাদের জন্য এটা দুর্ভাগ্যজনক।
তিনি বলেন, এই বিচার যখন শুরু হয় তখন থেকেই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন, মানবাধিকার গ্রুপ এবং আন্তর্জাতিক আইনজ্ঞরা এ আদালতের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে আপত্তি তুলেছেন। বিশেষ করে এর নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা এবং আইনজীবী ও বিবাদীর সাক্ষীদের হয়রানির বিষয়গুলো উঠে এসেছে।
পাক কর্মকর্তা নিজামীর পরিবার ও অনুসারীদের প্রতি সমবেদনা জানান।
উল্লেখ্য, এর আগে পাকিস্তানের এমন প্রতিক্রিয়ার জেরে বাংলাদেশ থেকে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। ঢাকায় পাক হাইকমিশনারকে ডেকে রীতিমতো ‘নাক না গলানোর’ পরামর্শ দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিনিটে মতিউর রহমান নিজামীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
এর আগে একাত্তরে মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে চার জন রাজনীতিকের ফাঁসি কার্যকর করেছে এ সরকার। এর মধ্যে তিন জনই জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষস্থানীয় নেতা। তারা সবাই ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকসেনাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এদেশে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিলেন বলে আদালতে প্রমাণিত হয়েছে।
২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর একাত্তরে মানবতা বিরোধী অপরাধীদের বিচারে আন্তর্জাকিত অপরাধ ট্রাইব্যুনাল নামে বিশেষ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়।