মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগে যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামীর সঙ্গে শেষ দেখা করে এসেছেন তার স্বজনরা। কারা কর্তৃপক্ষ ডেকে পাঠানোর পর মঙ্গলবার রাতে তিনটি গাড়িতে করে জামায়াতে ইসলামীর আমিরের স্বজনরা কারাফটকে উপস্থিত হন।
দেখা করতে তাদের ডেকে পাঠানো ইঙ্গিত দিলেও তার আধা ঘণ্টার মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল নিশ্চিত করেন মঙ্গলবারই কার্যকর হচ্ছে দণ্ড।
নিজামী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়ে কোনো আবেদন না করায় তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্বাহী আদেশ কারা কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয় বলে জানান মন্ত্রী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের আগে দণ্ড কার্যকরের তোড়জোড়ের মধ্যে বিকালে নিজামীর আইনজীবী মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, কারা কর্তৃপক্ষ স্বজনদের কারাগারে ডেকে পাঠিয়েছে।
এরপর পৌনে ৮টায় তিনটি গাড়িতে নিজামীর স্বজনদের মধ্যে অন্তত ২৪ জন কারাফটকে উপস্থিত হন। এর মধ্যে জামায়াত নেতার স্ত্রী, দুই ছেলে রয়েছেন। অন্যদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
রাত সাড়ে ৯টার দিকে পরিবারের সদস্যরা বেরিয়ে আসেন। ঢোকা কিংবা বের হওয়ার সময় পরিবারের কেউ সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।
তাদের সঙ্গে থাকা আইনজীবী মোস্তফা সাগিরউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, তারা এখন কোনো কথা বলবেন না।
গত বৃহস্পতিবার রিভিউয়ের রায় খারিজের পরদিন কাশিমপুর কারাগারে নিজামীর সঙ্গে দেখা করে এসেছিলেন পরিবারের সদস্যরা। এরপর রোববার জামায়াত আমিরকে ঢাকার কারাগারে আনা হয়।
তার তিন দিনের মধ্যে ফের দেখা করতে ডাক পেলেন পরিবারের সদস্যরা। মৃত্যুদণ্ডের আসামিদের স্বজনদের সঙ্গে শেষ দেখা করার সুযোগ দেওয়া হয়।
এর আগে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি নিজামীকে রিভিউ খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় সোমবার শোনানো হয়।
বুদ্ধিজীবী হত্যার পরিকল্পনা, নির্দেশনা ও নেতৃত্ব দেওয়ার দায়ে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ে একাত্তরের আলবদর নেতা নিজামীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে এই বছরের ৬ জানুয়ারি আপিল বিভাগের রায়ে মৃত্যুদণ্ডের সাজা বহাল রাখা হয়। তা পুনর্বিবেচনায় নিজামীর আবেদন গত ৫ মে খারিজ হয়ে যায়।
ওই রায় সোমবার প্রকাশের পর শুরু হয় মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া।