নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে ঐতিহাসিক প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে সই করেছেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা। শুক্রবার বিশ্ব ধরিত্রী দিবসে বিশ্বের ১৭১টি দেশ চুক্তিটিতে সই করে। নতুন কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তির জন্য এই সংখ্যাটি একটি রেকর্ড বলে জানিয়েছে বিবিসি।
প্রায় ১৫টি দেশ, প্রধানত ছোট ছোট দ্বীপরাষ্ট্রগুলো, ইতিমধ্যেই সমঝোতা চুক্তিটি অনুমোদন করেছে। কিন্তু কয়েক ডজন দেশকে এটি সই করতে কিছুটা সময় নিতে হয়েছে। চুক্তিটি কার্যকর হওয়ার আগে দ্বিতীয় পর্যায়ে তারা এতে সই করল।
উদ্বোধনী বক্তৃতায় জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন বলেন, প্যারিস ভবিষ্যতের সব প্রজন্মের জীবনধারা নির্ধারণ করে দেবে গভীরভাবে, সেই ভবিষ্যৎ যা ঝুঁকির মুখে ছিল।
পৃথিবীতে রেকর্ড তাপমাত্রার অভিজ্ঞতা আমরা অর্জন করে চলেছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছি। জাতীয় পর্যায় থেকে এই চুক্তিতে যোগ দেওয়ার জন্য আমি সব রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানাই। আজ আমরা ভবিষ্যতের জন্য একটি নতুন চুক্তিতে সই করছি- বলেন মুন।
তিনি বলেন, পৃথিবীতে কার্বন নিঃসরণ বেড়ে চলেছে। এর ফলে তাপামাত্রা বাড়ছে, আর ব্যাপকহারে বরফ গলছে। কার্বন নিঃসরণ চুক্তির লক্ষ্য অনুসারে তাপমাত্রা নির্দিষ্ট মাত্রায় কমিয়ে আনতে শিল্পোন্নত দেশগুলোকে কাজ করতে হবে। তাদেরকে কম কার্বন নিঃসরণনির্ভর অর্থনীতির দিকে অগ্রসর হতে হবে।
চুক্তিতে তাপমাত্রা কমানো ছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো যাতে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারে সেজন্য বিশেষ তহবিলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিশেষ করে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকির মুখে থাকা দেশগুলোকে বিশেষ সহায়তা দিতে বলা হয়েছে।
আগামী এক বছরের মধ্যে চুক্তিটি বাস্তবায়নে কাজ শুরু হবে। তবে প্রতিটি রাষ্ট্রকে নিজের দেশের সংসদে চুক্তিটি অনুসমর্থন করতে হবে। অবশ্য মার্শাল আইল্যান্ড, পালাউ, ফিজি এবং সুইজারল্যান্ডসহ কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যে তাদের পার্লামেন্টে অনুসমর্থন করেছে। তারা গতকালই আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পেরু, কঙ্গো, ব্রাজিলসহ বিভিন্ন দেশের প্রেসিডেন্ট, সরকারের মনোনীত প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। বক্তব্য রাখেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিও। ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজ প্রতিনিধি এবং জাতিসংঘের জলবায়ু সংক্রান্ত বিশেষ দূত ও অভিনেতা লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথিদের বক্তৃতার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১৯০টি শিশু জাতিসংঘ সম্মেলন কক্ষে প্রবেশ করে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রতিনিধিদের পাশে অবস্থান নেয়।