প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘প্রতিটি দেশ বা জাতি তার নিজস্ব জাতিসত্বা ও ভৌগলিক সীমারেখা দিয়ে পরিচিত হবে, তাতে তার ধর্মীয় পরিচয়ের কোন বাধা থাকে না।’
তিনি বলেন, ‘ধর্ম বিশ্বাসে আমরা মুসলমান হওয়ার পাশাপাশি জাতিসত্বার পরিচয়ে বাঙালি। বাঙালি হিসেবেই আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। সে কথা ভুললেও চলবে না। আর পহেলা বৈশাখ বাঙালি সংস্কৃতির উৎসব, এই উৎসব উদযাপন দেশের সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের।’
মানুষের আনন্দ-উৎসব করার জন্য সুযোগ প্রয়োজন, আমরা সে সুযোগ করে দিতে পেরেছি। আমাদের একটা দায়িত্ব রয়েছে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সেটা কোন পথে কিভাবে দিতে পারবো, তার নির্দেশনা সরকারই দেবে। আর আশা করি সকলেই এই নির্দেশনা মেনে চলবে।
যারা ধর্ম সম্পর্কে ‘নোংরা’ কথা লিখেন তাদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এখন একটা ফ্যাশন দাঁড়িয়েছে যে, ধর্মের বিরুদ্ধে কিছু লিখলেই তারা মুক্তচিন্তার ধারক! কিন্তু আমি এখানে কোনো মুক্ত চিন্তা দেখি না। আমি দেখি নোংরামি।’ ধর্মের সম্পর্কে কেউ নোংরা কথা লিখলে তা সহ্য করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একজন মুসলমান হিসেবে আমি প্রতিনিয়ত আমার ধর্মকে অনুসরণ করে চলি। কাজেই সে ধর্মের বিরুদ্ধে কেউ লিখলে আমি কষ্ট পাই।’
তিনি বলেন, ‘এত নোংরা নোংরা কথা কেন লিখবে? আমি আমার ধর্ম মানি, যাকে আমি নবি মানি তার সম্পর্কে নোংরা কথা কেউ যদি লেখে সেটা কখনোই আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। ঠিক তেমনি অন্য ধর্মের যারা তাদের সম্পর্কে কেউ কিছু লিখলে তাও কখনো গ্রহণযোগ্য হবে না। যারা এগুলো করে তা তাদের সম্পূর্ণ নোংরা মনের পরিচয়, বিকৃত মনের পরিচয়।’
এসব লেখার জন্য কোনো অঘটন ঘটলে তার দায় সরকার নেবে না, উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সবাইকেই সংযম নিয়ে চলতে হবে, শালীনতা বজায় রেখে চলতে হবে। অসভ্যতা কেউ করতে পারবে না। আর তা করলে তার দায়িত্ব আমরা নেবো না। তবে এটাও বলছি, মানুষকে খুন করার মধ্য দিয়ে কোনও সমস্যার সমাধান নেই। যারা এগুলোর জন্য খুন করছে তাও ইসলাম বিরোধী। বিচারের দায়িত্ব আল্লাহ তাদের দেয়নি। যাদের কথা পছন্দ হল না, তাদের খুনের ঘটনাও সরকার বরদাশত করবে না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বোমা মেরে মানুষকে হত্যা করা, মানুষকে হুমকি দেয়া, এটা ধর্মের অবমাননা, বদনাম। আমার প্রশ্ন এরা নিজেরাই ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করে কি না। যুগ যুগ ধরে চলে আসা বাঙালি সংস্কৃতির রীতি-নীতি পালন করে যাওয়ার পাশাপাশি দেশবাসী যার যার ধর্মীয় অনুশাসন অনুযায়ী ধর্ম পালন করবে। সে ধর্মাচার হবে সহনশীল পরিবেশে।’
সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নতুন বছরে বাংলাদেশের আরও অগ্রগতি প্রত্যাশা করেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সমাগতদের মিষ্টি, ফলসহ বিভিন্ন খাবারে আপ্যায়িত করা হয়।