প্রচণ্ড গরমে স্বাস্থ্য সমস্যার পাশাপাশি হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকে। সাধারণত প্রচণ্ড তাপদাহে শরীরের তাপমাত্রা আকস্মিক বেড়ে গিয়ে হিটস্ট্রোক হয়। অনেক ক্ষেত্রে জীবন বিপন্ন পর্যন্ত হতে পারে। তাই যাদের তাপদাহে কাজ করতে হয়, তাদের সতর্ক থাকতে হবে।
এই হিটস্ট্রোক থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য কিছু বিষয় মেনে চলতে হবে:
১. এই গরমে সবসময় সুতির পোশাক পরুন। পাতলা ঢিলেঢালা সুতি কাপড়ই ভালো গরমের জন্য।
২. পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। তাহলে শরীর যেমন প্রয়োজনীয় ঘাম তৈরি করতে পারবে তেমনই শরীরে পানির ভারসাম্যও ঠিক থাকবে।
৩. যেকোনো রক্তচাপ বা হার্টের ওষুধ খাওয়ার আগে ভালো করে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে নিন। এসব ওষুধ রক্তপ্রবাহ বাড়িয়ে দেয়। তাই হিটস্ট্রোকের সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।
৪. যেকোনো শারীরিক সমস্যা যেমন ক্লান্তি, অবসাদ, বমি বমি ভাব বা শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
৫. সকাল বেলা হাঁটতে যাওয়ার সময়টা এগিয়ে নিন। দিনের বেলায় কোনো ব্যয়াম করবেন না। আর চেষ্টা করুন ব্যায়ামের মাঝে মাঝে বিরতি নিতে এবং তরল পানীয় পান করতে।
৬. দিনের সবচেয়ে গরম অংশটুকু এড়িয়ে চলুন। চেষ্টা করুন এই সময়ে ঘরের বাইরে না বেরোতে। আর ক্যাফেইনযুক্ত খাবারও এড়িয়ে চলুন। যদি সেটা সম্ভব না হয় তাহলে বারবার কোনো পানীয় পান করুন এবং ঠান্ডা জায়গায় বারে বারে বিশ্রাম নিন।
৭. সূর্যের তাপে যদি আপনার ত্বক পুড়ে যায়, তাহলে সেটা শরীরকে আর ঠাণ্ডা করতে পারে না। চেষ্টা করুন ত্বকটাকে বাঁচাতে। বড় কোনো হ্যাট এবং সানগ্লাস নিন বাইরে বের হওয়ার আগে।
৮. অনেকেই জরুরি কোনো কাজে যাওয়ার সময় বাচ্চাকে গাড়িতে রেখে যান। এই গরমের সময় এমনটা করবেন না। সূর্যের তাপে গাড়ির মধ্যে তাপমাত্রা আরও বেড়ে যায়। এর ফলে বাচ্চারা হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়।
৯. রোদ থেকে এসেই যেমন ঠান্ডা এসিতে ঢুকবেন না। তেমন এসি থেকে বেরিয়েই তীব্র রোদে যাবেন না। চেষ্টা করুন স্বাভাবিক তাপমাত্রায় আগে শরীর মানিয়ে নিতে।
১. শরীর প্রচণ্ড ঘামতে শুরু করে আবার হঠাৎ করে ঘাম বন্ধ হয়ে যায়
২. নিঃশ্বাস দ্রুত হয়
৩. নাড়ির অস্বাভাবিক স্পন্দন হওয়া অর্থাৎ হঠাৎ ক্ষীণ ও দ্রুত হয়
৪. রক্তচাপ কমে যায়
৫. প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায়
৬. হাত পা কাঁপা, শরীরে খিঁচুনি হয়
৭. মাথা ঝিমঝিম করা
৮. তীব্র মাথাব্যথা
৯. ব্যবহারে অস্বাভাবিকতার প্রকাশ
১০. কথা-বার্তায় অসংলগ্ন হওয়া।
স্ট্রোক হলে করণীয়:
১. হিটস্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দিলেই প্রথমে শরীরের তাপ কমানোর জন্য ঠাণ্ডা বরফ পানি দিয়ে শরীর মুছে দিন
২. আক্রান্ত ব্যক্তিকে শীতল পরিবেশে নিয়ে আসুন
৩. শরীরের কাপড় যথাসম্ভব খুলে নিন
৪. প্রচুর ঠাণ্ডা পানি, ফলের শরবত অথবা স্যালাইন পান করতে দিন
৫. হিটস্ট্রোক হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্থানীয় হাসপাতালে নিতে হবে।
হিটস্ট্রোকে অনেক সময় বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। এমন কী মৃত্যুও হতে পারে। তাই আমাদের গরমের এই সময়টায় সাবধানে থাকতে হবে। বেশি বেশি তরল খাবার খেতে হবে।