এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার ১২ লাখ ১৮ হাজার ৬২৮ জন শিক্ষার্থী অংশ নেবেন; এই সংখ্যা গতবারের চেয়ে প্রায় দেড়লাখ বেশি।
আগামী ৩ এপ্রিল থেকে ৯ জুন হবে এইচএসসির তত্ত্বীয় পরীক্ষা। আর ১১ থেকে ২০ জুনের মধ্যে হবে ব্যবহারিক পরীক্ষা।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
গত বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১০ লাখ ৭৩ হাজার ৮৮৪ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন। এই হিসাবে এবার পরীক্ষার্থী বেড়েছে এক লাখ ৪৪ হাজার ৭৪৪ জন।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, এবার দুই হাজার ৪৫২টি কেন্দ্রে আট হাজার ৫৩৩টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেবে। গতবারের চেয়ে এবার ২২৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ৩৩টি পরীক্ষা কেন্দ্র বেড়েছে।
এবার এইচএসসিতে আটটি সাধারণ বোর্ডের অধীনে ১০ লাখ ২০ হাজার ১০৯ জন, মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে আলিমে ৯১ হাজার ৫৯১ জন, কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসি বিএম-এ ১ লাখ ২ হাজার ১৩২ জন এবং ডিআইবিএসে চার হাজার ৭৯৬ জন পরীক্ষা দেবে বলে জানান নাহিদ।
এবার মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৬ লাখ ৫৪ হাজার ১১৪ জন ছাত্র এবং ৫ লাখ ৬৪ হাজার ৫১৪ জন ছাত্রী।
ঢাকার বাইরে এবার বিদেশের সাতটি কেন্দ্রে ২৬২ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে, এর মধ্যে ১২৪ জন ছাত্র এবং ১৩৮ জন ছাত্রী।
১৯টি বিষয়ের ৩৬টি পত্রের পরীক্ষা এবার সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা হবে।
এইচএসসিতে ২০১২ সালে বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা সৃজনশীল প্রশ্নে হয়। গতবছর ১৩টি বিষয়ের ২৫টি পত্রের পরীক্ষা সৃজনশীল পদ্ধতিতে হয়েছিল।
এসএসসির মত এইচএসসিতেও এবার প্রথমে বহুনির্বাচনী ও পরে সৃজনশীল/রচনামূলক (তত্ত্বীয়) অংশের পরীক্ষা হবে।
এ দুই পরীক্ষার মধ্যে ১০ মিনিট সময় রাখা হয়েছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সকাল ১০টায় বহুনির্বাচনী পরীক্ষা শুরু হবে। আর ১০টা ৫০ মিনিটে শুরু হবে সৃজনশীল অংশের পরীক্ষা।
তবে ‘ট্র্যাডিশনাল’ বিষয়ের ক্ষেত্রে রচনামূলক পরীক্ষা ১০টায় শুরু হবে। বিকালের পরীক্ষার ক্ষেত্রে একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে।
এবারও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা শ্রুতিলেখক নিয়ে পরীক্ষা দিতে পারবে। এ ধরনের পরীক্ষার্থীরা অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় পাবে।
বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন (অটিস্টিক এবং ডাউন সিনড্রোম বা সেরিব্রালপালসি আক্রান্ত) পরীক্ষার্থীদের ৩০ মিনিট অতিরিক্ত সময় দেওয়া হবে। এ ধরনের শিক্ষার্থীরা অভিভাবক, শিক্ষক বা সাহায্যকারী নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।
‘নকলমুক্ত’ পরিবেশে পরীক্ষা নেওয়ার আশা প্রকাশ করে নাহিদ বলেন, প্রশ্ন ফাঁসের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
“যারা এসবের সঙ্গে (প্রশ্ন ফাঁস) যুক্ত থাকেন তারা পুলিশি ও গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারিতে আছেন।”
নাহিদ বলেন, কোনো শিক্ষক কোনোভাবেই কোনো শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় সহযোগিতা করতে পারবেন না। তা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে ‘বিভ্রান্তি ছড়ালেও’ আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেন শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি বলেন, “শিক্ষার মান বাড়ছে। তবে বিশ্বমানের করতে আরও সময় লাগবে। সৃজনশীল পদ্ধতি নিয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, আমরা এর ফল পাচ্ছি।”
অন্যদের মধ্যে শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু বক্কর ছিদ্দিক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।