তিন দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর পর অবশেষে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের প্রথম অংশ। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফ্লাইওভারটির তেজগাঁও সাতরাস্তা থেকে হলি ফ্যামিলি পর্যন্ত দুই কিলোমিটার অংশের উদ্বোধন করবেন বলে জানা গেছে।
এছাড়া পুরো প্রকল্পের ৭০ ভাগের মতো কাজ শেষ হয়েছে জানিয়ে প্রকৌশলী নাজমুল বলেন, “তিন ধাপে কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। বাংলামোটর থেকে মৌচাক অংশ আগামী জুনে খুলে দেওয়া হবে। আর বাকি অংশটুকু ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে খুলে দেওয়ার জন্য সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে।”
তিন দফায় মেয়াদ বাড়ানো এই প্রকল্প মেয়াদ রয়েছে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত।
মঙ্গলবার ফ্লাইওভারের শেষ মুহূর্তের সাজসজ্জার কাজ চলছিল। রঙের প্রলেপ দেওয়ার পাশাপাশি ঘষামাজা ও সৌন্দর্য বর্ধনে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন শ্রমিকরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, ফ্লাইওভারের মূল কাজ শেষ হয়েছে কয়েক দিন আগেই। ল্যাম্প পোস্টের জন্য বৈদ্যুতিক তার টানানো হয়েছে। গার্ডারের কাজও শেষ হয়েছে। ফিনিশিং শেষে নির্মাণ শ্রমিকরা সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ২০১৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি নির্মাণকাজ শুরু করা এই ফ্লাইওভার দুই বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০১৫ সালের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭৭২ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
তবে ঠিকাদার ও তত্ত্বাবধায়ক প্রতিষ্ঠানের ব্যর্থতার কারণে তিন দফায় সময় বাড়ানোর পর এখন ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ করার আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। মেয়াদ বাড়ার সমান্তরালে প্রকল্পের ব্যয়ও প্রায় ৫৮ শতাংশ বাড়িয়ে এক হাজার ২১৯ কোটি টাকায় উন্নীত করেছে সরকার।
চার লেনবিশিষ্ট এ উড়ালসড়কে উঠা-নামার জন্য তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা, সোনারগাঁও হোটেল, মগবাজার, রমনা (হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল সংলগ্ন রাস্তা), বাংলামোটর, মালিবাগ, রাজারবাগ পুলিশ লাইনস ও শান্তিনগর মোড়ে লুপ বা র্যাম্প রাখা হয়েছে।
ভারতের সিমপ্লেক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড ও নাভানার যৌথ উদ্যোগের প্রতিষ্ঠান ‘সিমপ্লেক্স নাভানা জেভি’ এবং চীনা প্রতিষ্ঠান দ্য নাম্বার ফোর মেটালার্জিক্যাল কনস্ট্রাকশন ওভারসিজ কোম্পানি (এমসিসিসি) ও তমা কনস্ট্রাকশন লিমিটেড উড়ালসড়কটির নির্মাণ কাজ করছে।
সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (এসএফডি) এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ওএফআইডি) এই প্রকল্পে ঋণ দিচ্ছে। সংস্থা দুটির ৫৭২ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার কথা থাকলেও এখন তা বাড়িয়ে ৭৭৬ কোটি টাকা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নের পরিমাণ ২০০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৪২ কোটি ৭৩ লাখ টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে।
ঢাকার যানজট নিরসনে ১৯৯৯ সালের ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন বোর্ডের (ডিটিসিবি) সমীক্ষা অনুযায়ী ২০টি পয়েন্টে ফ্লাইওভার/আন্ডারপাস, বাস বে, বাস টার্মিনাল, পার্কিং এরিয়া নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছিল।
তারই অংশ হিসেবে মহাখালী ও খিলগাঁও ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে বাস্তবায়নাধীন মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার প্রকল্প ২০১১ সালে অনুমোদন পায়।