এক গৃহকর্মীকে ছাদ থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগে তার লাশ নিয়ে মিরপুরে বিক্ষোভ করছে স্থানীয়রা। ময়নাতদন্তের পর মেয়েটির লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হলে স্থানীয়রা কাজীপাড়ায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
কাফরুল থানা পুলিশ জানায়, মেয়েটির স্বজন ও এলাকাবাসীর বিক্ষোভের কারণে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা রোকেয়া সরণী হয়ে ফার্মগেইট-মিরপুর ১০ নম্বর সার্কেলের পথে যান চলাচল বন্ধ থাকে।
পরে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ‘বুঝিয়ে তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়’ বলে পল্লবী পুলিশের সহকারী কমিশনার মো. জাকির হোসেন জানান।
কাজীপাড়া থেকে সরে গেলেও বিক্ষোভকারীরা পরে কাফরুল থানার সামনে অবস্থান নেন। বেলা পৌনে১ টার সময়ও পুলিশের সামনে জড়ো হয়ে তাদের স্লোগান দিতে দেখা যায়।
রোববার কাফরুলের ন্যাম গার্ডেন অফিসার্স কোয়ার্টার্স এলাকার তিন নম্বর ভবনের নিচে জনিয়া বেগম নামে ২২ বছর বয়সী ওই গৃহকর্মীর লাশ পাওয়া যায়। স্বজনদের অভিযোগ, জনিয়াকে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হলেও পুলিশ মামলা নিচ্ছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাফরুল থানার এসআই কামরুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় ইতোমধ্যে কাফরুল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। যে ভবনের নিচ থেকে জনিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, তার চতুর্থ তলায় (৪০৩ বি) জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের পরিচালক যুগ্ম সচিব আহসান হাবিবের বাসা। জানিয়া তার মা ফুলবানুর পরিবর্তে ওই বাসায় কাজ করতে গিয়েছিলেন।
“আমাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী, কাজ শেষে সে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। পরে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়,” বলেন কামরুজ্জামান।
পল্লবী পুলিশের সহকারী কমিশনার মো. জাকির হোসেন বলেন, এ ঘটনায় ওই ভবনের একজন কেয়ারটেকার ও তিনজন লিফটম্যানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
স্বজনদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কাউকে আমাদের গ্রেপ্তার করতে বাধা নেই। ওই গৃহকর্মীর শরীরে কোনো দাগ ছিল না। মৃত্যু কীভাবে হয়েছে তাও সঠিকভাবে জানা নেই।”
ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে পরে সে অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। জনিয়া নিহতের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক।
নেটওয়ার্কের সমন্বয়কারী সৈয়দ সুলতান মাহমুদ সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার আহ্বান জানান।
‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি ২০১৫’ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার ঘোষিত ওই নীতিমালা বাস্তবায়িত না হওয়ায় দেশে একের পর এক গৃহশ্রমিক হত্যা ও তাদের উপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে।