মঙ্গলবার, এপ্রিল ১৬, ২০২৪

দুই মন্ত্রীর বক্তব্য অসাংবিধানিক : অ্যাটর্নি জেনারেল

যা যা মিস করেছেন

Atorni Jenaral the mail bd

প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে সরিয়ে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলীর আপিল মামলা পুনরায় শুনানির বিষয়ে সরকারের দু’জন মন্ত্রীর বক্তব্যকে অসাংবিধানিক বলে দাবি করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

প্রধান বিচারপতিকে লক্ষ্য করে মন্ত্রীদের এ ধরনের বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রের এই প্রধান আইন কর্মকর্তা বলেন, ‘তাদের এই বক্তব্য বিচার বিভাগকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।  এ ধরনের বক্তব্য অসাংবিধানিক।’

তিনি বলেছেন, ‘প্রধান বিচারপতি কোনো ব্যক্তি নন, একটি প্রতিষ্ঠান।  প্রধান বিচারপতিকে বিতর্কিত করা মানে বিচারব্যবস্থাকে বিতর্কিত করা।  তাই প্রধান বিচারপতি ও বিচারালয় নিয়ে বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকতে সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

রোববার (৬ মার্চ) দুপুরে অ্যাটর্নি জেনারেল তার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশে এ কথা বলেন।

জামায়াত নেতা মীর কাসেমের আপিল শুনানি পুনরায় শুরু করার যে দাবি খাদ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সে প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘তার এ বক্তব্য ন্যায়বিচার ব্যাহত করবে ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।’

মীর কাসেমের মামলার রায় কী হয়, তা দেখতে সবাইকে ৮ মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরামর্শ দেন তিনি।

এর আগে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা মীর কাসেমের মামলার বিচারকাজে তদন্ত সংস্থার ‘গাফিলতি’র কথা বলেন।  তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এবং তদন্ত সংস্থা যে গাফিলতি করেছে এজন্য তাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত।’

প্রধান বিচারপতির এ বক্তব্যের পর আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছিলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষের গাফিলতি থাকলে খতিয়ে দেখা হবে।’

এ প্রেক্ষিতে শনিবার (৫ মার্চ) প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে নতুন বেঞ্চ গঠন করে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেমের আপিলের পুনঃশুনানি দাবি করেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই মামলার রায় কী হবে তা প্রধান বিচারপতির প্রকাশ্যে আদালতে বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আমরা  অনুধাবন করতে পেরেছি।  তার বক্তব্যের মধ্যে এটা অনুধাবন করেছি, এই মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়ার আর কোনো সুযোগ নেই।  জামায়াত-শিবিরের আন্তর্জাতিক লবিস্টরা যে সুরে কথা বলছে একই সুরে কথা বলছেন প্রধান বিচারপতি।  তাদের অভিযোগগুলোর সত্যতা দিয়েছেন তিনি।

‘শুধু তা-ই নয় এই বক্তব্যের মাধ্যমে ট্রাইব্যুনালের গত ৫ বছরের বিচার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ ও হত্যা করা হয়েছে।  আমি মনে করি প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে নতুন করে শুনানি হওয়া উচিত। উনাকে (এসকে সিনহা) বাদ দিয়ে মীর কাসেমের শুনানি পুনরায় শুরু করুন।’

খাদ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে ৪৫ বছরে অনেক বিচারপতি এসেছে আর গেছে, কিন্তু কেউ তার মতো এত অতিবক্তব্য দেয়নি।  তার অতিকথনে সুধী সমাজের মানুষেরা জিহ্বায় কামড় দিচ্ছেন।  তাই তাকে অতিকথন থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।  আর তা না হলে সরকারের নতুন করে বিকল্প চিন্তাভাবনা করা উচিত বলে আমি মনে করছি।’

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত ওই সভায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছিলেন, ‘যুদ্ধাপরাধের বিচার ও বিচার পরবর্তী তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের জন্য আইনের সংশোধন করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বলছি, এই রায় নিয়ে শঙ্কা এখন সংকটে পরিণত হয়েছে।  তবে এ সংকট আমাদের সৃষ্ট নয়।  সংকট সৃষ্টি করেছেন প্রধান বিচারপতি।  এটাই আমাদের দুঃখ।  রায়ের আগে প্রধান বিচারপতি যদি এমন কথা বলেন, তাহলে জাতি কোথায় যাবে?’

 

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security