রাজধানীর শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনিতে অরক্ষিত নলকূপের পাইপে পড়ে শিশু জিহাদের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। তবে এই ক্ষতিপূরণের পরিমাণ কতো হবে তা পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করলে জানা যাবে।
বৃহস্পতিবার এক রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি কাজী রেজাউল হক আকন্দের ডিভিশন বেঞ্চ এই আদেশ দেয়।
আদালত বলেছে, এই ঘটনায় জন্য যেসব প্রতিষ্ঠান দায়ী তাদের দায়িত্বে অবহেলার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তাদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রায়ে রাজধানীতে যেসব অরক্ষিত নলকূপ ও ড্রেনেজ লাইন রয়েছে তার একটি তালিকা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেয়ার জনব্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আদালত বলেছে, এই ধরনের শিশু মৃত্যুর ঘটনা রোধে কোর্ট নীতিমালা প্রকাশ করবে।
২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর শাহজাহানপুর রেল কলোনিতে খোলা থাকা কয়েকশ ফুট গভীর একটি নলকূপের পাইপে পড়ে যায় চার বছরের জিহাদ। প্রায় ২৩ ঘণ্টা রুদ্ধশ্বাস অভিযানে ক্যামেরা নামিয়েও ফায়ার সার্ভিস কোনো মানুষের ছবি না পাওয়ায় পাইপে জিহাদের অস্তিত্ব থাকা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়।
এরপর উদ্ধার অভিযান স্থগিতের ঘোষণা দেয় ফায়ার সার্ভিস। এর কয়েক মিনিট পর কয়েকজন তরুণের তত্পরতায় তৈরি করা যন্ত্রে পাইপের নিচ থেকে উঠে আসে অচেতন জিহাদ। হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিত্সকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এরপর ২৮ ডিসেম্বর জিহাদের পরিবারের জন্য ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে চিল্ড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেন।
একই দিন জিহাদকে জীবিত উদ্ধারে সরকারি সংস্থাগুলোর ব্যর্থতা তদন্তে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে অন্য একটি রিট আবেদন দায়ের করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ মাইনুল হক।
রিট আবেদনে তদন্ত কমিটিতে জিহাদের মরদেহ উদ্ধারকারী স্বেচ্ছাসেবীদের অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন করা হয়। আর এ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে জিহাদকে উদ্ধারে গাফিলতিতে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশনা চাওয়া হয়।