সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ‘ব্যবহার করে’ পৌর নির্বাচনে জনগণের ভোট ‘ছিনতাই’ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীতে ছাত্রদলের এক সমাবেশে তিনি বলেন, “হাসিনা ও রকিব মার্কা নির্বাচন আমরা প্রত্যাখান করেছি। দেশের জনগণ মানে না। কোনো দলও মানছে না। খালি যারা চুরি করে জিতে এসেছে, তারাই বেশি করে ঢোল পিটাচ্ছে।”
সাত বছর পর ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের নৌকার সঙ্গে সরাসরি লড়াইয়ে ভরাডুবি হয়েছে বিএনপির ধানের শীষের। বেসরকারিভাবে প্রকাশিত ২২৭টি মেয়র পদের মধ্যে বিএনপির ১৭৭টির বিপরীতে বিএনপির প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন ২২টি পৌরসভায়।
আওয়ামী লীগ সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি করলেও দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি স্থানীয় সরকারের এই ভোটে ‘ব্যাপক জালিয়াতির’ অভিযোগ এনেছে।
খালেদা বলেন, “আমরা বলতে চাই- ভোট চুরি ও ছিনতাই করে, ডাকাতি করে- এতো কিছু করেও যত মেয়র পদ নিয়ে যান না কেন, আনন্দিত হওয়ার কিছু নেই, তৃপ্তি পাওয়ার কিছু নেই,”।
তার অভিযোগ, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ‘দলীয় কর্মীর মতো’ ব্যবহার করেছে।
“তারা (সরকার) ভালো করেই জানে এর পেছনে কারা। কারা আপনাদের সাহায্য করেছে, ব্যালট পেপারে সিল মেরেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে পর্যন্ত আপনারা নষ্ট করেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রিজাইডিং অফিসারদের দলীয় কর্মীর মতো ব্যবহার করে তাদের সুনাম নষ্ট করেছেন।”
‘চাকরি যাওয়ার ভয়ে’ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ‘বাধ্য হয়ে অসহায়ের মতো’ কাজ করতে হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই ছাত্র সমাবেশের আয়োজন করা হয়। মিলনায়তনের বাইরে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং বেলুন উড়িয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন করেন খালেদা জিয়া।
মিলনায়তনের ভেতরে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবির পাশাপাশি দলের নিখোঁজ সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলী, কারাগারে মারা যাওয়া নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু ও কারাবন্দি ছাত্রদলের সভাপতি রাজিব আহসানের ছবি সম্বলিত ব্যানার টানানো হয়।
কারাবন্দি ছাত্রদল সভাপতি রাজিবের লেখা একটি ‘খোলা চিঠি’ অনুষ্ঠানে পড়ে শোনান সংগঠনের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার পেশ করেন সাংগঠনিক প্রতিবেদন।
৫০ মিনিটের বক্তব্যে খালেদা জিয়া দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ‘সরকারের অপশাসন ও দুর্নীতি’ এবং শিক্ষাঙ্গনের অবস্থা তুলে ধরেন।