তেমন শীত নেই। রাজধানীর রাস্তাজুড়ে প্রায় নিরবতা। তবে শ্রদ্ধা জানানোর প্রয়াস নিয়ে অনেকেই ছুটে এসেছেন রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে। তাই এখানকার চিত্র একেবারেই ভিন্ন। এখানে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়াও এসেছেন বিভিন্ন পেশাজীবীর অসংখ্য মানুষ। সবার লক্ষ্য একটাই। একাত্তরের এই দিনে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জানানো।
প্রতিবছরই শ্রদ্ধা জানানো হয়, তবে এবার আনন্দটা একটু বেশি। কিছুদিন আগেই মৃত্যুদণ্ড হয়েছে যুদ্ধাপরাধীদের। সেই রেশ যেন সবার চোখেমুখে ছড়িয়ে আছে। সবাই যেন বলতে এসেছে, ‘তোমরা এবার শান্তিতে ঘুমাও, তোমাদের হত্যার বিচার আমরা করছি।’
রোববার দিবাগত মধ্যরাত থেকেই রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে নির্মিত শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে নানা বয়সের মানুষ আসতে থাকে। রাত ১২টা এক মিনিটে স্থানীয় সাংসদ ও সাবেক স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের নেতৃত্বে ফুল দিয়ে ও মোমবাতি জ্বালিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শুরু হয়। এ সময় অসংখ্য মোমবাতি জ্বালিয়ে আলোর মালায় সাজিয়ে তোলা হয় স্মৃতিসৌধ চত্বর।
রায়েরবাজারে আবার শ্রদ্ধা জানানোর পর্ব শুরু হয় সোমবার সকাল ৮টা থেকে। ফুলে ফুলে ঢেকে যায় স্মৃতিসৌধের বেদি। সেখানে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সারের মেয়ে শমী কায়সার, ডা. আবদুল আলীম চৌধুরীর মেয়ে ডা. নুজহাত চৌধুরী, সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেনের ছেলে তৌহীদ রেজা নূর প্রমুখ।
এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের মধ্যে ছিল বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, যুবলীগ প্রভৃতি।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রায়েরবাজারে জনতার স্রোত বাড়তে থাকে স্মৃতিসৌধ চত্বরের দক্ষিণ পাশে বিশালাকার ডিজিটাল প্রিন্টে মুক্তিযুদ্ধের ছবি ও সংবাদপত্রের কাটিং প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। উত্তর পাশে বসানো হয় বুদ্ধিজীবীদের প্রতিকৃতি। বধ্যভূমিতে পড়ে থাকা বুদ্ধিজীবীদের আদলে বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করে খেলাঘর আসর।