করোনাভাইরাসের মহামারি ঠেকাতে লকডাউন চলছে।প্রায় এক মাস ধরে মানুষ গৃহবন্দি থেকেই এই মারণ ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে চলেছে। অফিস-কাছারি, পাড়া-প্রতিবেশী, আড্ডা, বন্ধু-বান্ধব সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন আজ মানুষ। এমতাবস্থায় মন খারাপ থাকা কিংবা ঘনঘন মেজাজ হারানো খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। একভাবে বাড়িতে থাকতে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছেন সকলেই। কিন্তু পরিস্থিতি এমনই হাজার কষ্ট হলেও এমন ভাবেই আপাতত দিন কাটাতে হবে আমাদের সকলকে। অগত্যা মাথা ঠান্ডা রাখা ছাড়া কোন উপায় নেই। কিন্তু কিভাবে?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মুহূর্তে মানসিকভাবে সুস্থ থাকাটা খুবই দরকার। আর ঘনঘন, ছোট ছোট ব্যাপারে রেগে যাওয়া কিংবা খিটখিট করা মোটেও সুস্থতার লক্ষণ নয়। এই পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রেখে আমাদের সকলকে লড়তে হবে। সেক্ষেত্রে মাত্র তিনটি ঘরোয়া উপায় প্রতিদিন যদি আমরা নিয়মিত পালন করি তাহলে অতি সহজেই আমরা আমাদের রাগকে আয়ত্তে আনতে পারব।
কী সেগুলো? আসুন জেনে নিই…
প্রাণায়াম : মন এবং তার সঙ্গে নিজেদের শরীর ভালো রাখতে প্রাণায়ামের জুড়ি মেলা ভার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে যদি কিছুটা সময় প্রাণায়াম করা যায় তাহলে সারাদিন মন ভাল থাকে। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই প্রয়োজন অভ্যাস এবং অধ্যাবসায়। একদিনে প্রাণায়ামের মাধ্যমে মন ভালো করা সম্ভব নয়। তবে প্রতিদিন যদি নিয়ম করে প্রাণায়ম করা হয় তাহলে মানসিক চাপ, চিন্তা, বিষণ্ণতার হাত থেকে খুব সহজেই মুক্তি পাওয়া যায়।
মিউজিক থেরাপি : আজকালকার দিনে মন ভালো করতে মিউজিক থেরাপি খুবই প্রচলিত একটি মাধ্যম। যদিও মিউজিক থেরাপির বিভিন্ন ক্লাস হয় কিন্তু অনলাইনেও মিউজিক থেরাপি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়। এই থেরাপির মোদ্দাকথা হল গান শোনা এবং গান শুনতে শুনতেই মন ভালো করা। তাই মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে মিউজিক থেরাপির পরামর্শ অনেক বিশেষজ্ঞই দিয়ে থাকেন।
খারাপ প্রভাব থেকে দূরে থাকা : এখনকার দিনে ‘গুড ভাইবস অনলি’ কথাটি খুবই প্রচলিত। এই কথাটির আক্ষরিক মানে হল চারপাশে শুধু ভালোর প্রভাব বজায় রাখা অর্থাৎ খারাপ সবকিছুকে নিজের চারপাশ থেকে দূরে রাখা। এই মুহূর্তে আমাদের এই পন্থা অবলম্বন করা খুবই দরকারী। কারণ বর্তমান পরিস্থিতি এমন যেখানে শুধু ভয়, আশঙ্কা আর মৃত্যু ছাড়া কোনও কিছুই অবশিষ্ট নেই। এমতাবস্থায় যদি সব সময় এই মৃত্যু বা বিষাদময় খবর না শুনে কিছু ভালো খবর দেখি বা শুনি তাহলে মন ভালো থাকবে অনেকটা।
তাই এই সময় টিভি, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে বাচ্চাদের এই সময়ে খারাপ খবর থেকে যতটা দূরে রাখা যায় তারই চেষ্টা করতে পরামর্শ দিতে দেখা গেছে অধিকাংশ মনোবিদ।