বিশ্বজুড়ে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা সরকারিভাবে ৪ লাখ ৪৪ হাজার বলে জানানো হয়েছে। তবে মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়ে অন্তত ১ লাখ ৩০ হাজার বেশি বলে দাবি করা হয়েছে এক গবেষণায়।
২৭টি দেশের প্রাথমিক মৃত্যুর তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অনেক জায়গাতেই স্বাভাবিক মৃত্যুর সংখ্যার চেয়ে মহামারির সময় মৃত্যুর হার অনেক বেশি ছিল। এমনকী করোনাভাইরাসে রেকর্ড করা মৃত্যুর সংখ্যা হিসেবে আনার পরও সে একই অবস্থা লক্ষ্ করা গেছে। এ থেকে বোঝা গেছে, সারা বিশ্বে করোনায় মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশ পায়নি। সরকারি পরিসংখ্যানের চেয়ে তা অনেক বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, দুর্বল ও ভঙ্গুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাসহ নানা কারণে এসব মানুষের নাম লিপিবদ্ধ হয়নি। খবর বিবিসির
এক দেশের সঙ্গে আরেক দেশে করোনায় মৃত্যুর প্রকৃত হিসাব তুলনা করা কঠিন ব্যাপার। কতো মানুষের পরীক্ষা করা হলো, হাসপাতালে কত মানুষের মৃত্যু ঘটল, হাসপাতালের বাইরে কতজন মানুষ মারা গেল-এসব তথ্যের স্বচ্ছতার ওপরে প্রকৃত হিসাব যাচাই-বাছাই করা সম্ভব। তবে অন্তত ২৭টি দেশের তথ্য যাচাই করে দেখা গেছে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এ মহামারিতে সেসব দেশে মৃত্যুর সংখ্যা এবং হার বেশি। বিশ্বব্যাপী নানা দেশের সরকার যে তথ্য দিচ্ছে তার চেয়ে আসল মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি।
যুক্তরাজ্যে অন্য বছরের তুলনায় একই সময়ে ৪৩ শতাংশ বেশি মানুষ মারা গেছে। ৬৪ হাজার ৫০০ মানুষ বেশি মারা গেছে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে।দীর্ঘদিন ধরে লন্ডনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড ছিল। ওয়েস্ট মিডল্যান্ড, নর্থ ওয়েস্টসহ অনেক এলাকায় অন্যান্য সময়ের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। দেশটিতে সরকারি হিসাবে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৪২ হাজারের কিছু বেশি।
স্পেনে ৫০ শতাংশ মানুষ বেশি মারা গেছে। প্রায় ৪২ হাজার ৯০০ মানুষ বেশি মারা গেছে। এই পরিসংখ্যান ২ মার্চ থেকে ১৭ মে পর্যন্ত। একই সময়ে করোনা সংক্রান্ত রোগে আনুষ্ঠানিক মৃতের সংখ্যা ২৭ হাজার ৭০৯ জন।
বেলজিয়ামে ৩৭ শতাংশ বেশি মানুষ মারা গেছে। স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৮১০০ জন বেশি মানুষ মারা গেছে এই করোনার সময়ে। আনুষ্ঠানিকভাবে ৯ হাজার ৬০০ এর বেশি মানুষ মারা গেছে দেশটিতে।
ইতালিতে মৃত্যুর সংখ্যা ৪০ শতাংশ বেশি। প্রায় ৪২ হাজার ৯০০ জন ব্যক্তি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মারা গেছে। সরকারি পরিসংখ্যানে করোনায় দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ৪৪৮ জন। ব্রাজিলেও স্বাভাবিক সময় থেকে মারা গেছে ৩৮ শতাংশ বেশি, যা ১৯ হাজার ৩০০ জন। সরকারি হিসাবে ৪৬ হাজার ৬৬৫ জন মৃত্যু দেখানো হয়েছে লাতিন আমেরিকার দেশটিতে।
স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ৯৭ হাজার ৩০০ বেশি মানুষ মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে, যা ১৬ শতাংশ বেশি। এখন পর্যন্ত দেশটিতে সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে এক লাখ ১৯ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।